গত এক লাখ বছরের মধ্যে পৃথিবীর সবচেয়ে উষ্ণ বছর ছিল ২০২৩ সাল! আঁতকে উঠছেন তো শুনে? হ্যাঁ, তা আঁতকে ওঠার মতো পরিসংখ্যানই তো বটে। পৃথিবীর উষ্ণতার আগের সব রেকর্ড ভেঙে দিল এই ২০২৩ সাল। তার মানে, ২০২৩ এই গ্রহের সবচেয়ে উষ্ণতম বছর ছিল! ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ‘কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস’ মঙ্গলবার এ কথা জানিয়েছে।
কেন এরকম হচ্ছে? বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, মানবসৃষ্ট কারণে জলবায়ু পরিবর্তন ঘটছে দ্রুত হারে। আর তারই জেরে দিন-দিন এমন উষ্ণ হয়ে উঠছে পৃথিবী। এখনই কার্যকর কোনও পদক্ষেপ না করলে এই পরিস্থিতির আগামীদিনে আরও অবনতি হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের তরফেই।
কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিসের তথ্য বলছে, জীবাশ্ম জ্বালানির বহুল ব্যবহার শুরুর আগের পর্বের ছবিটা ছিল সম্পূর্ণ আলাদা। সেই পর্বের দীর্ঘ সময়ের গড় উষ্ণতা বৃদ্ধি ছিল খুবই কম। সেই তুলনায় শুধু গত বছরই পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বেড়েছে প্রায় ১.৪৮ ডিগ্রি।
এর আগেও নানা সংবাদ মাধ্যমের বিশ্লেষণ আমাদের জানিয়েছিল, গত বছরের জুলাই মাস থেকে প্রায় প্রতিদিনই গ্লোবাল টেম্পারেচার বৃদ্ধির রেকর্ড তৈরি হয়েছে। একই সময়পর্বে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রাও আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি ছিল, বলতে গেলে, সর্বোচ্চ ছিল। আর উষ্ণতা বৃদ্ধির এই তথ্য-পরিসংখ্যান বলছে, উষ্ণতা বৃদ্ধি ঠেকানোর যে লক্ষ্যমাত্রা গোটা পৃথিবী জুড়ে নেওয়া হয়েছে, সেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রায় ব্যর্থ এ গ্রহ।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার প্রাক্তন মহাসচিব অধ্যাপক পেত্তেরি তালাস এ বিষয়ে বলেছেন, এ শুধু উষ্ণতা বৃদ্ধির পরিসংখ্যান নয়, চরম এই আবহাওয়া প্রতিনিয়ত বিশ্ব জুড়ে অসংখ্য মানুষের জীবন ও জীবিকা ধ্বংস করে দিচ্ছে। এ তারও অতি জরুরি তথ্য!
ইউরোপিয় ইউনিয়নের জলবায়ু নজরদারি সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৫ সালের জলবায়ু চুক্তি অনুযায়ী গড় তাপমাত্রার সীমা ছিল ১.৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। নতুন বছরে এখনই ইঙ্গিত মিলছে, বিশ্বের গড় তাপমাত্রা চলতি বছরেই ১.৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের এই সীমা ছাড়িয়ে যেতে পারে। আর জলবায়ু নজরদারি সংস্থা কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিসের বক্তব্য, ‘১৯৯১ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ক্রমাগত তাপমাত্র বেড়েছে। ২০১৬ সালে এই বৃদ্ধি ছিল সবচেয়ে বেশি।’