এত বিতর্ক, হইচই সত্ত্বেও কেন ডাক্তারির সর্বভারতীয় প্রবেশিকা নিট বাতিল না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার? এ বার তারই ব্যাখ্যা দিলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্র্রীর দাবি, নিটের প্রশ্নফাঁসের প্রভাব পড়েছে কেবল সীমিত সংখ্যক পরীক্ষার্থীদের উপর। তাঁর আরও দাবি, ২০০৪ এবং ২০১৫ সালের ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষায় যে প্রশ্নফাঁস হয়েছিল, তার অভিঘাত এত বেশি ছিল যে, পুরো পরীক্ষা বাতিল করতে হয়েছিল। সেই তুলনায় ২০২৪ সালের নেটের প্রশ্নফাঁসের প্রভাব অনেক কম। তাই পুরো পরীক্ষা বাতিল হলে এমন লক্ষাধিক পরীক্ষার্থীর উপর প্রভাব পড়বে, যাঁরা নিয়ম মেনে পরীক্ষায় পাশ করেছেন। পাশাপাশি ধর্মেন্দ্র আরও জানিয়েছেন, নিট সংক্রান্ত মামলার শুনানি সুপ্রিম কোর্টে চলছে এবং এ বিষয়ে আদালতের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে।
২০২৪ সালে নিট নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে পরীক্ষায় বেনিয়ম এবং টাকার পরিবর্তে প্রশ্নফাঁসের। নিটে ৬৭ জন পরীক্ষার্থী ৭২০-তে ৭২০ পাওয়ার পর বিতর্কের সূত্রপাত। যদিও পরীক্ষার আয়োজক সংস্থা এনটিএ জানিয়েছিল, ভুল প্রশ্নের জন্য এবং কয়েক জন প্রার্থীকে ‘গ্রেস মার্ক’ দেওয়ার কারণেই তাঁদের নম্বর বেড়েছে। এর মধ্যেই নেটে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। তার পর থেকেই দেশ জুড়ে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। মামলা দায়ের হয়েছে দেশের বিভিন্ন আদালতে। গোটা বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সমালোচনার মুখে পড়েছে এনটিএ। তবে কেন্দ্র এখনও পর্যন্ত নেট বাতিল করেনি।
কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীর দাবি, এনটিএ-র ‘প্রাতিষ্ঠানিক ব্যর্থতা’র কারণেই নেটের প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে এবং প্রশ্নফাঁসের কারণে বিহারের মুষ্টিমেয় পরীক্ষার্থী সুবিধা ভোগ করেছেন। ধর্মেন্দ্র জানিয়েছেন, তদন্ত চলছে। এনটিএ-র কার্যকারিতা খতিয়ে দেখার জন্য একটি উচ্চ স্তরের প্যানেল গঠন করবে সরকার। তবে এখনই পরীক্ষা বাতিলের দরকার নেই। কিন্তু কেন তদন্ত চলা সত্ত্বেও পরীক্ষা বাতিল করল না সরকার? নয়াদিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করে ধর্মেন্দ্র বলেন, ‘‘কয়েকটি বিচ্ছিন্ন বেনিয়মের জন্য যে সব প্রার্থী সঠিক ভাবে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন, তাঁদের কেরিয়ারের ক্ষতি করা অন্যায়।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা বিহার পুলিশের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রেখে চলেছি। আমরা তাদের কাছ থেকে একটি রিপোর্টও চেয়েছি। আমাদের হাতে সেই রিপোর্ট পৌঁছলে, আমরা ভবিষ্যতের পদক্ষেপ করব। আমি সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিয়ে বলছি যে, সমস্ত অসঙ্গতি সংশোধন করা হবে। সরকার কোন রকম বেনিয়ম বা অসদাচরণ সহ্য করা হবে না।’’
উল্লেখ্য, নিটের প্রশ্নফাঁস নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে বিহারের আর্থিক দুর্নীতি দমন শাখা (ইএইউ)। নিটকাণ্ডে এখনও পর্যন্ত ১৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।