সিডনিতে হেরে বর্ডার-গাওস্কর ট্রফি খুইয়েছে ভারত। এর পরের টেস্ট সিরিজ় রয়েছে জুন মাসে, ইংল্যান্ডের সঙ্গে। তাই বিরাট কোহলি বা রোহিত শর্মা টেস্ট খেলা চালিয়ে যাবেন কি না, তা নিয়ে জল্পনা চলছে। সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার দুই ক্রিকেটারের উপরেই ছেড়ে দিলেন গৌতম গম্ভীর। তাঁর মতে, কারও ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে তিনি হস্তক্ষেপ করতে পারেন না। একই সঙ্গে ভারতের কোচ জানিয়েছেন, সিরিজ় হারলেও অনেক কিছু ইতিবাচক পেয়েছেন তিনি। জসপ্রীত বুমরাহের সঙ্গে ঝামেলা করার জন্য ধমক দিয়েছেন স্যাম কনস্টাসকে।
সাংবাদিক বৈঠকে গম্ভীর আর কী কী বললেন, তা তুলে ধরল আনন্দবাজার অনলাইন:
রোহিত-কোহলির ভবিষ্যৎ
কারও ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। সেটা ওদের উপরেই নির্ভর করছে। তবে একটা কথা বলতে পারি, খেলার প্রতি ওদের আবেগ, খিদে একই রকম রয়েছে। আশা করি আগামী দিনে ওরা ভারতীয় ক্রিকেটকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। আমরা সবাই জানি, ওরা যা-ই ঠিক করে থাকুক সেটা ভারতীয় ক্রিকেটের ভালর কথা ভেবেই করবে।
সিডনিতে রোহিতের বাদ পড়া প্রসঙ্গে
এটা নিয়ে এত কথা বলা হয়েছে। অন্তত আরও একটু দায়িত্বশীল হওয়া উচিত ছিল আমাদের। যদি একজন অধিনায়ক বা ধরুন একজন নেতা নিজের আগে দলকে রেখে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়, তা হলে আমার মনে হয় না কিছু খারাপ কাজ করেছে। অনেক কিছু বলা এবং লেখা হয়েছে। তবে এটা কোনও দলের নয়, একজনের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। সেটাও দলের স্বার্থকে মাথায় রেখেই নেওয়া হয়েছে। তাই আগামী দিনে কেউ এমন কাজ করলে আশা করি সে-ও দলের কথা মাথায় রেখেই করবে।
সিরিজ় থেকে ইতিবাচক দিক
এই সিরিজ় থেকে অনেক কিছু ইতিবাচক পেয়েছি। দলের অনেকে প্রথম বার অস্ট্রেলিয়ায় খেলেছে। সবাই জানি এটা কতটা কঠিন সফর। অনেক দিন পর পাঁচ ম্যাচের সিরিজ় হল। যশস্বী, নীতীশ, আকাশদীপ— আলাদা করে আর কারও নাম বলতে চাই না। প্রত্যেকে ভাল খেলেছে। মহম্মদ সিরাজের মানসিকতা অসাধারণ ছিল। আমি আর কাউকে দেখিনি প্রতিটা বলে নিজের সেরাটা দিতে। দেশের হয়ে খেলার জন্য এ রকম মানসিকতাই দরকার। বুমরাহের বোলিংটাও দেখুন। তবে মানসিকতার দিক থেকে সিরাজ বাকিদের থেকে এগিয়ে থাকবে।
টেস্ট নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা
এখনই এটা বলা যাবে না। পরিকল্পনা করার জন্য এখনও পাঁচ মাস রয়েছে। সবে সিরিজ় শেষ হয়েছে। পাঁচ মাসে অনেক কিছু বদলে যায়। ক্রিকেটার বদলায়, খেলাটা বদলায়, মানুষ বদলায়। দেখা যাক ইংল্যান্ডের সিরিজ়ের আগে কী হয়। যা-ই হোক তাতে ভারতীয় ক্রিকেটের পক্ষে ভালই হবে।
অস্ট্রেলিয়ায় কঠিন সফর
খুব কঠিন সময় গিয়েছে তাতে সন্দেহ নেই। শেষ আটটা টেস্টে এই ফল হবে এটা আমরা আশা করিনি। তবে খেলাটাই এ রকম। লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। শুধু ক্রিকেটার নয়, সাপোর্ট স্টাফদেরও দায়িত্ব নিতে হবে। যেটা ঠিক মনে হবে সেটাই করতে হবে। ফলাফল আমাদের পক্ষে যায়নি এটা মেনে নিতেই হবে।
কনস্টাস-বিতর্ক
ক্রিকেট কঠিন খেলা। তাই আপনাকেও নরম হলে চলবে না। উসমান খোয়াজা যেখানে বল খেলার জন্য সময় নিচ্ছে, সেখানে কনস্টাসের কোনও কথা বলার অধিকারই নেই। সে রকম হলে তো আম্পায়ারই বুমরাহকে সতর্ক করে দিত। কোহলির সঙ্গে যা হয়েছে তা অতীত। এখন আর মনে করতে চাই না। আগেই বলেছি ক্রিকেট কঠিন খেলা। এ রকম হতেই পারে। আগামী দিনেও হয়তো হবে। এটাকে এত বড় করে দেখানোর দরকার নেই।
ছয় ইনিংসে ২০০-র কম রান
দলের অনেকে প্রথম অস্ট্রেলিয়ায় খেলতে এসেছে। আমি বলব না যে ওদের জন্যই হয়েছে। কারণ দলে অভিজ্ঞ ক্রিকেটারেরাও রয়েছে। কিছুটা পিচও দায়ী। এখানে ঘরের মাঠের মতো স্বচ্ছন্দ নই। আমাদের এটা নিয়ে আরও ভাবতে হবে এবং শিক্ষা নিতে হবে।