গালওয়ান সংঘর্ষ থেকে শিক্ষা, জুডো-ক্যারাটেও এ বার শিখতে হবে চিন সীমান্তে থাকা সেনাদের

শুধু অস্ত্রচালনা নয়, এ বার বাধ্যতামূলক ভাবে হাত চালানোও শিখতে হবে চিন সীমান্তে প্রহরায় নিযুক্ত সেনাদের। মূলত ভারত-চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর প্রহরায় নিযুক্ত ইন্দো-তিব্বত সীমান্ত পুলিশ (আইটিবিপি)-এর জন্য এই নিয়মই চালু করতে চলেছে ভারতীয় সেনা। সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, জুডো, ক্যারাটের মতো মার্শাল আর্ট থেকে নেওয়া ১৫-২০টি আক্রমণ এবং প্রতি আক্রমণের কৌশল শেখানো হবে সেনাবাহিনীর সদস্যদের। যুদ্ধকৌশলের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ রেখেই এগুলো শেখানো হবে বলে জানা গিয়েছে।

সেনাবাহিনীতে সদ্য যাঁরা নিযুক্ত হবেন, তাঁরা পাঁচকুলায় তিন মাসের জন্য প্রাথমিক প্রশিক্ষণ নেবেন। সেখানেই তাঁদের মার্শাল আর্টের প্রশিক্ষণ নিতে হবে। মূলত ঘুষি চালানো, কিল মারার মতো কৌশল শেখানো হবে। এক সেনা আধিকারিকের কথায় আক্রমণাত্মক এবং রক্ষণাত্মক দুই ধরনের কৌশলই শেখানো হবে।

আইটিবিপি-র অন্যতম শীর্ষ আধিকারিক ঈশ্বর সিংহ দুহান সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানান, সেনার প্রাক্তন ডিজি সঞ্জয় অরোরার পরামর্শেই বাধ্যতামূলক এই প্রশিক্ষণ চালু করার কথা ভাবা হয়েছে। বায়ুসেনার এই ভাবনার পিছনে গালওয়ান সংঘর্ষের স্মৃতি কাজ করছে বলে মনে করছেন সেনা আধিকারিকদের একাংশ।

২০২০ সালের জুন মাসে ভারত-চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে গালওয়ান উপত্যকায় হাতাহাতি বাঁধে ভারত এবং চিনের সেনাদের মধ্যে। ভারতের অভিযোগ, চিনের সেনারা পাথর, লোহার রড, পেরেক লাগানো লাঠি নিয়ে হামলা চালায় ভারতীয় সেনাদের উপর। এই সংঘর্ষে ভারতের ২০ জন সৈন্য মারা যায়। চিনের তরফে দাবি করা হয়, তাঁদের মাত্র চার জন সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন। যদিও রাশিয়ার একটি সংবাদ সংস্থা দাবি করে, চিনে ৪৫ জন নিহত হয়েছেন। আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, চিনের অন্তত ৩৫ জন সেনা হত হয়েছেন।

এই ঘটনার পরেই ভারতীয় সেনার থিঙ্কট্যাঙ্করা বুঝতে পারেন সেনা সদস্যদের শুধু অস্ত্র চালনার পাঠ থাকাই যথেষ্ট নয়, গালওয়ানের মতো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মোকাবিলায় খালি হাতে লড়াই করার কৌশল শেখানোও জরুরি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.