সমস্ত আইন আঞ্চলিক ভাষায় প্রকাশের বিষয়ে বিবেচনা করুক কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারগুলি। মঙ্গলবার এমনই নির্দেশ দিল সু্প্রিম কোর্ট। যে আইনের দ্বারা সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ন্ত্রিত হয়, তা যেন সহজেই সবাই বুঝতে পারে, তা নিশ্চিত করতেই স্থানীয় ভাষায় আইন প্রকাশের কথা ভেবে দেখা উচিত বলে পর্যবেক্ষণ করে শীর্ষ আদালত। উল্লেখ্য, বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী অশ্বিনী উপাধ্যায় শীর্ষ আদালতের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন যাতে কোনও বিল সংসদ বা বিধানসভায় পেশ করার আগে স্থানীয় ভাষায় তার খসড়া সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। সেই সংক্রান্ত আবেদন অবশ্য আদালত খারিজ করে দেয়। আবেদনকারী অশ্বিনীর দাবি ছিল, সরকারি ওয়েবসাইটে আগে থেকে বিলের খসড়া পেশ করা হলে আইন তৈরির প্রক্রিয়ায় মানুষের অংশগ্রহণ থাকবে। পাশাপাশি আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় থাকবে।
অশ্বিনীর পক্ষে শীর্ষ আদালতে উপস্থিত হয়ে সিনিয়র অ্যাডভোকেট গোপাল শঙ্করনারায়ণন বলেন, ‘আইন প্রণয়নের পর সেগুলোর মধ্যে কিছু পরিবর্তন করা প্রয়োজন হয়ে পড়ে। আমি মনে করি, আইন সচিবের কাছেও হয়ত আইন প্রণয়নের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত তথ্য থাকে না।’ এর প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি ইউইউ ললিত বলেন, ‘আমাদের দেশের আইনে জনসাধারণের পরামর্শ গ্রহণ করার জন্য কিছু বিধান রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, শহর পরিকল্পনা, পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়নের মতো ক্ষেত্রে জনসাধারণের পরামর্শ গ্রহণ করতে পারে সরকার। দেশে গণশুনানি, জনসাধারণের পরামর্শ, গণবিজ্ঞপ্তির বিধান রয়েছে।’
আইনজীবী শঙ্করনারায়ণন প্রধান বিচারপতির যুক্তি স্বীকার করেন। তবে তিনি দাবি করেন, এই ধরনের বিধান থাকলেও তাদের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতিনিধিদের কাছে সব তথ্য নাও থাকতে পারে। আইনজীবী হিসেবে, আমরা এমন অনেক ক্ষেত্রেই তর্ক করি যেখানে আমরা বিশেষজ্ঞ নই। এই আদালতও অ্যামিকাস কিউরি, বিশেষজ্ঞ, কমিশন নিয়োগ করে অনেক মামলার ক্ষেত্রে।’ আবেদনকারী আইনজীবীর যুক্তি ছিল, এই আবহে জনসাধারণের থেকেও পরামর্শ নেওয়া উচিত আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে। এই যুক্তি তর্কের পর প্রধান বিচারপতি খসড়া বিল পেশ করার নির্দেশ না দিলও রাজ্যগুলি এবং কেন্দ্রকে সব আইনকে স্থানীয় ভাষায় প্রকাশ করার কথা বিবেচনা করতে বলেন।