একটা দল প্লে-অফে একটা পা বাড়িয়েই রেখেছে। শনিবারের ম্যাচে না হারলেই প্লে-অফ নিশ্চিত হয়ে যাবে। অন্য দলটি আইপিএলে সবার আগে প্লে-অফ থেকে ছিটকে গিয়েছে। শনিবারের ম্যাচ নেহাতই তাদের কাছে সম্মানরক্ষার। এই অবস্থায় ইডেন গার্ডেন্সে শনিবার মুখোমুখি হতে চলেছে কলকাতা নাইট রাইডার্স এবং মুম্বই ইন্ডিয়ান্স।
দুই দল মুখোমুখি হয়েছিল গত সপ্তাহেই। ওয়াংখেড়েতে সেই ম্যাচে ব্যাটিং ব্যর্থতার মুখে পড়ে কলকাতা। বেঙ্কটেশ আয়ার এবং মণীশ পাণ্ডে সে যাত্রায় মুখরক্ষা করেছিলেন। পরে বল হাতে মিচেল স্টার্ক চার উইকেট নিয়ে দলকে জিতিয়ে দেন। ১২ বছর বাদে ওয়াংখেড়েয় জেতে নাইটেরা। কিন্তু ঘরের মাঠেও মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে তাদের ইতিহাস খুব ভাল নয়।
মুখোমুখি সাক্ষাতে কেকেআর ১০-২৩ পিছিয়ে রয়েছে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে। ঘরের মাঠে মোট ১১টি ম্যাচের মধ্যে কলকাতা জিতেছে চারটি ম্যাচে। হেরেছে সাতটি ম্যাচে। পাঁচ বছর পর আবার ইডেন গার্ডেন্সে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে খেলতে নামবে কলকাতা। ২০১৯ সালে শেষ বার নেমেছিল।
সেই ম্যাচে ক্রিস লিন, শুভমন গিল এবং আন্দ্রে রাসেলের ঝড়ে জিতেছিল কেকেআর। তবে অনেকেই ভুলে যাননি হার্দিক পাণ্ড্যের ৩৮ বলে ৯১ রানের ইনিংস। পরের তিন বছর কোভিডে অন্যত্র খেলা হয়। গত বার কেকেআর একটিই ম্যাচ খেলেছিল মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে। সেটি হয়েছিল ওয়াংখেড়েতে।
তবে সাম্প্রতিক ফর্ম দেখলে খাতায়-কলমে কলকাতাকেই এগিয়ে রাখতে হবে। এমনিতেই গোটা দল আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে। ব্যাটিং বা বোলিং, সব বিভাগেই তারা ভাল খেলছে। ফিল সল্ট এবং সুনীল নারাইন যদি লখনউ ম্যাচের মতো ছন্দে থাকেন, তা হলে মুম্বইয়ের কপালে দুঃখ রয়েছে। নারাইন এমনিতেই বেগনি টুপির তালিকায় রয়েছেন। ৪০০-র উপর রান হয়ে গিয়েছে। বল হাতেও মাঝের দিকে এমন রান চেপে দিচ্ছেন যে বিপক্ষ দলগুলির অসুবিধা হয়ে যাচ্ছে। সল্টও ঝোড়ো শুরু করছেন।
কেকেআরের মিডল অর্ডারও খারাপ নয়। মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে প্রথম পর্বে টপ অর্ডার ভেঙে পড়লেও মিডল অর্ডারে বেঙ্কটেশ এবং ইমপ্যাক্ট সাব মণীশ লড়াকু রান তুলে দিয়েছিলেন। চাপের মুখে পড়লে মিডল অর্ডার যে বাঁচিয়ে দিতে পারে, তা প্রমাণিত।
চিন্তা একটু থেকে যাচ্ছে বোলিং নিয়ে। হর্ষিত রানা এবং বৈভব অরোরা উইকেট নিলেও কোনও কোনও ওভারে অনিয়ন্ত্রিত বোলিং করে বড্ড বেশি রান দিচ্ছেন। একই কথা বলা চলে মিচেল স্টার্কের ক্ষেত্রেও। শনিবার তাঁকে নিয়ন্ত্রিত বল করতেই হবে।
কেকেআরের আরও একটা ভয় হল, মুম্বইয়ের হারানোর কিছু নেই। প্লে-অফ থেকে ছিটকে যাওয়ায় অনেক বেশি খোলামনে, চাপমুক্ত হয়ে খেলতে পারবেন রোহিত শর্মা, ঈশান কিশনেরা। কারও ব্যাট থেকে বড় রানের ইনিংস বেরোলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
চলতি আইপিএল থেকে মুম্বই বিদায় নিলেও তাদের হালকা ভাবে নিচ্ছে না কেকেআর। নিজেদের পরিকল্পনা করে রেখেছে তাঁরা। ম্যাচের আগের দিন স্পিনার বরুণ চক্রবর্তী বলেছেন, “আমাদের বিরুদ্ধে মুম্বইয়ের রেকর্ড ভাল। ওদের অনেক ভাল ক্রিকেটার রয়েছে। একটা ম্যাচ জিতলেই আমাদের প্লে-অফ পাকা। কিন্তু আমরা তিনটে ম্যাচ জিতে প্রথম দুইয়ে শেষ করতে চাই।”
এ বার ফাইনাল চেন্নাইয়ের মাঠে। সেটি বরুণের ঘরের মাঠ। এখন থেকে ফাইনালের স্বপ্ন দেখা শুরু করেছেন তিনি। বরুণ বলেন, “চিপকের উইকেটে আমি অনেক খেলেছি। ওটা আমার ঘরের মাঠ। ওখানে স্পিনারেরা সুবিধা পায়। আশা করছি ফাইনালে উঠলে আমরা ভাল খেলব।”