সিবিআই হেফাজতে বগটুইকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত লালন শেখের ‘রহস্যমৃত্যু’ নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হল। মঙ্গলবার হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ মামলা করার অনুমতিও দিয়েছেন। জনস্বার্থ মামলার দ্রুত শুনানির আর্জি জানিয়েছেন মামলাকারী আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়।
প্রসঙ্গত, সোমবার বিকেলে রামপুরহাটের অস্থায়ী সিবিআই ক্যাম্পের শৌচাগারে লাল রঙের গামছা গলায় জড়ানো অবস্থায় লালনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। সিবিআই সূত্রে দাবি, লালন ‘আত্মহত্যা’ করেছেন। পুলিশ যদিও লালনের দেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছে। সোমবার রাতে রামপুরহাটে সিবিআইয়ের অস্থায়ী শিবিরে যান পুলিশ সুপার নগেন্দ্র ত্রিপাঠী। তিনি বলেন, ‘‘সিবিআইয়ের ডিআইজির অফিস থেকে আজ (সোমবার) বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিট নাগাদ আমাকে টেলিফোনে জানানো হয় যে, সিবিআই হেফাজতে থাকা লালন শেখের জেরা চলছিল। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে যে আইনি প্রক্রিয়া রয়েছে, তা শুরু করেছি আমরা। ৪টা ৪০ মিনিট নাগাদ এ নিয়ে সিবিআইয়ের তরফে স্থানীয় থানাকেও জানানো হয়েছে। এই ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্ত শুরু করবে পুলিশ। এ নিয়ে বিচারবিভাগীয় তদন্তও হবে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখা হবে। আমরা সেই রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছি।’’
তবে সিবিআই হেফাজতে থাকাকালীন লালনের মৃত্যু নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল উঠেছে। এই প্রেক্ষিতে কলকাতা হাই কোর্টেও দায়ের হল মামলা।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের গত ২১ মার্চ রামপুরহাটের বগটুই মোড়ে বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের উপপ্রধান ভাদুকে খুন করা হয়। তাঁকে লক্ষ্য করে বোমা মারে দুষ্কৃতীরা। সেই খুনের পর পরই বগটুই গ্রামের একের পর এক বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। পর পর কয়েকটি বাড়িতে আগুন লাগে। তার জেরে ১০ জনের মৃত্যু হয়। এর পর কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে ওই ঘটনার তদন্তভার হাতে নেয় সিবিআই।
গত কয়েক মাসে বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। রামপুরহাটে সিবিআইয়ের অস্থায়ী শিবিরে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে একাধিক জনকে। সিবিআই দাবি করেছে বগটুই-কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত লালন। তিনি নিহত তৃণমূল নেতা ভাদু শেখের ডান হাত ছিলেন। বগটুইকাণ্ডে কাণ্ডে ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে করে লালনের নাম পান তাঁরা। সোমবার সিবিআই হেফাজতে থাকাকালীন সেই লালন শেখের মৃত্যু হয়েছে।