ঘানার বিরুদ্ধে লড়াই করে হারার পরে তখন বিধ্বস্ত দক্ষিণ কোরিয়ার অধিনায়ক সন হিউ মিন। মাঠেই কান্নায় ভেঙে পড়েছেন তিনি। অথচ সেই সময় তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে নিজস্বী তোলেন ঘানার কোচিং দলের এক সদস্য। এই ঘটনায় বিতর্কে জড়িয়েছে ঘানা। এক জন অধিনায়কের মনের অবস্থা না বুঝে নিজস্বী তোলায় ঘানা ফুটবল দলের মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
ঘানা-দক্ষিণ কোরিয়া ম্যাচের পরে সনের কাছে যান ঘানার ফুটবলার ও কোচিং দলের সদস্যরা। কেউ কেউ তাঁকে স্বান্ত্বনা দিচ্ছিলেন। ঠিক তখনই কোচিং দলের এক সদস্য হাসিমুখে সনের পাশে দাঁড়িয়ে নিজস্বী তোলেন। সনকে অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে থাকতে দেখা যায়। এমনকি সেখান থেকে সরে যান তিনি। দেখে বোঝা যাচ্ছিল, যথেষ্ট বিরক্ত হয়েছেন তিনি।
ঘানার কোচিং দলের সদস্যের এই কাজে বিরক্ত হয়েছেন অনেকে। তাঁদের মতে, ঘানার ফুটবলার থেকে শুরু করে সমর্থকরা বরাবরই আনন্দের মধ্যে থাকেন। কিন্তু তাঁদের বোঝা উচিত, অন্য দলের সমর্থক বা ফুটবলারদেরও আবেগ থাকতে পারে। সেই আবেগকে সম্মান করা উচিত। ভাল খেলেও একটুর জন্য ম্যাচ হারতে হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়াকে। দলের অধিনায়ক হিসাবে স্বভাবতই দুঃখে থাকবেন সন। সেটা ঘানার কোচিং দলের সদস্যের বোঝা উচিত ছিল।
ঘানার বিরুদ্ধে ৩-২ গোলে হারে দক্ষিণ কোরিয়া। কিন্তু ম্যাচের শুরু থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার গতির সঙ্গে পেরে উঠছিল না ঘানা। তবু খেলার বিপরীতে এগিয়ে যায় ঘানাই। ২৪ মিনিটে গোল করেন মহম্মদ সালিসু। বক্সে ক্রস ভাসিয়েছিলেন জর্ডান আয়িউ। দক্ষিণ কোরিয়া বল ক্লিয়ার করতে পারেননি। সালিসু বাঁ পায়ের শটে গোল করেন। তবু একটি হ্যান্ডবলের জন্য ভার-এর সিদ্ধান্তের অপেক্ষা করা হয়েছিল। তবে রেফারি শেষ মেশ গোলের সিদ্ধান্তই দেন। ১০ মিনিট পরে আবার এগিয়ে যায় ঘানা। এ বার গোল মহম্মদ কুদুসের। এ বারও সেই ক্রস করেন আয়িউ। সিউং-গুকে টপকে গোল করেন কুদুস। কোরিয়া রক্ষণের তখন দিশেহারা অবস্থা। কী ভাবে ঘানাকে আটকানো যাবে বুঝতেই পারছিল না তারা। প্রথমার্ধে আর গোল দিতে পারেনি ঘানা।
দ্বিতীয়ার্ধে অন্য দক্ষিণ কোরিয়াকে দেখা যায়। অনেক বেশি গতিশীল খেলছিল তারা। ঘানা বরং একটু হালকা ভাবে নিয়েছিল প্রতিপক্ষকে। তার দাম চোকাতে হয় পর পর দু’টি গোলে। ৫৩ মিনিটে চোয়ের হেড বাঁচিয়ে দেন ঘানার গোলকিপার আতি-জিগি। পাঁচ মিনিট পরেই গোল। বাঁ দিক থেকে দারুণ ক্রস ভাসিয়েছিলেন লি কাং ইন। সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় থেকে গোল করেন চো গুয়ে সুং। তিন মিনিট পরেই সমতা ফেরায় কোরিয়া। এ বারও দুরন্ত হেডে গোল করেন চো। প্রায় গোললাইন থেকে বক্সে বল ভাসিয়েছিলেন কিম জিন সু। বক্সে তখন ঘানার চার ডিফেন্ডার ছিলেন। পিছন থেকে দৌড়ে এসে অনেকটা লাফিয়ে বল জালে জড়ান চো। কেউ ভাবতেই পারেননি চো হেড করতে আসবেন।
তবে ম্যাচে ফিরতে সময় নেয়নি ঘানা। সাত মিনিট পরেই তাদের এগিয়ে দেন সেই কুদুস। এ ক্ষেত্রে কোরিয়ার রক্ষণ দায়ী থাকবে। বাঁ দিক থেকে ভেসে আসা ক্রসে শট মিস করেন ইনাকি উইলিয়ামস। একটু ডান দিকে দাঁড়িয়ে থাকা কুদুস বাঁ পায়ের জোরালো শটে বল জালে জড়ান। সেই গোল আর শোধ করতে পারেনি দক্ষিণ কোরিয়া।