এক মাস আগেই স্ত্রীকে হারিয়েছেন। ক’দিন ধরে খিঁচুনির সমস্যায় ভুগছিলেন বছর বত্রিশের যুবক। দু’দিন আগেই মল্লিকবাজারের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে। শনিবারের বারবেলায় ওই যুবকই ভয়ঙ্কর কাণ্ড ঘটালেন। যা দেখে স্তম্ভিত শহর কলকাতা।
মল্লিকবাজারের বেসরকারি হাসপাতালের আট তলার কার্নিশ থেকে যে রোগী পড়ে যান, তাঁর নাম সুজিত অধিকারী। তাঁরই সম্পর্কিত ভাই সুভাষ দাস বলেন, ‘‘ও আমার মামাতো দাদা হয়। দাদাকে দু’দিন আগেই হাসপাতালে ভর্তি করি। খিঁচুনির সমস্যা ছিল। ডাক্তারের পরামর্শ মেনেই আমরা হাসপাতালে ভর্তি করি।’’ এর পরই তিনি জানান, এক মাস আগেই ওই যুবকের স্ত্রীর মৃত্যু হয়। ব্লাড ক্যানসারে ভুগছিলেন তাঁর স্ত্রী। তা হলে কি স্ত্রীর শোকেই এমন অবস্থা? যদিও এ বিষয়ে কোনও উত্তর মেলেনি।
বাড়িতেও আগে সুজিত এমন ‘অস্বাভাবিক’ কোনও আচরণ করেননি বলেই দাবি করেছেন তাঁর ভাই সুভাষ। সুজিতের বাড়ি দক্ষিণদাঁড়ি এলাকায়। বাড়িতে বর্তমানে মা রয়েছেন। শনি বা রবিবারই তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হত বলে জানিয়েছেন সুভাষ।
অন্য দিকে, শনিবার প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে হাসপাতালের আট তলার কার্নিশে বিপজ্জনক ভাবে বসেছিলেন সুজিত। দমকল বাহিনীর শত চেষ্টাতেও তাঁকে উদ্ধার করা যায়নি। এমনকি, হাইড্রলিক ল্যাডারও আনা হয়। খাবার দেখানো হয় যুবককে। একটা সময় যুবকের এক আত্মীয়কে এনে বোঝানো হয়। কিন্তু সব চেষ্টাই ব্যর্থ হয়ে যায়। শেষমেশ কার্নিশ থেকে ঝুলতে থাকেন ওই যুবক। তার পর নিজেই প্রাণ রক্ষার শেষ চেষ্টা করেন। কিন্তু পেরে ওঠেননি। কার্নিশ থেকে পড়ে যান যুবক। এত ক্ষণ সময়ের পরেও দমকল, পুলিশ থাকা সত্ত্বেও সুজিতকে উদ্ধার করা গেল না কেন— এ প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। উদ্ধারকাজে যে সন্তুষ্ট নন, সে কথা সুভাষও বলেছেন। পাশাপাশি হাসপাতালের জানলা বেয়ে কী ভাবে কার্নিশে গেলেন রোগী? এই প্রশ্নও দানা বেঁধেছে। সুভাষের কথায়, ‘‘এত বড় হাসপাতাল। অথচ জানলায় কোনও গ্রিল নেই!”