গত সপ্তাহে এসএসকেএম হাসপাতালে রোগী নিয়ে গিয়ে তুলকালাম করেন মদন মিত্র। এবার তোপের মুখে কলকাতার ৬ সরকারি হাসপাতাল। হাসপাতালগুলির পরিচ্ছন্নতা নেই, ডাক্তারদের ব্যবহার খারাপ-সহ আরও অনেক অভিযোগ নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে রীতিমত কড়া বার্তা দেন স্বাস্থ্য সচিব। তালিকায় রয়েছে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ ও এসএসকেএম হাসপাতাল।
গত শুক্রবার কলকাতার ৬ সরকারি হাসপাতালের অধ্যক্ষ উপাধক্ষ্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন স্বাস্থ্য সচিব। সেই বৈঠকে ছিলেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, আরজিকর, সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ, চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ, এসলএসকেএম হাসপাতালের ডিরেক্টর, অধিকর্তা-সহ প্রশাসনিক কর্তারা। সেখানে একের পর এক অভিযোগের ভিত্তিতে তোপের মুখে পড়তে হল হাসপাতালের কর্তাদের। এর মধ্যে ছিল রেফার রোগ। কলকাতার সরকারি হাসপাতালগুলির মধ্যেও রেফার রোগ রয়েছে। তা নিয়েই ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্বাস্থ্য সচিব। সম্ভবত এনিয়ে শেষ অভিযোগ উঠছিল মদন মিত্রের তরফ থেকে। এনিয়ে প্রচুর জলঘোলা হয়েছিল।
ওই বৈঠকে হাসপাতাল ধরে ধরে দোষ ত্রুটি নিয়ে আলোচনা হয়। এসএসকেএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বলা হয়, হাসপাতালটিকে কার্যত দূর্গ বানিয়ে ফেলেছেন আপনারা। সাধারণ মানুষের কর্তাদের কাছ পর্যন্ত যাওয়ার জো নেই সেখানে। ন্য়াশনাল মেডিক্যাল কলেজের কর্তাদের বলা হয়, সিনিয়র ডাক্তার বা কর্তৃপক্ষের কেউ প্রায় থাকেই না। আরজিকর মেডিক্যাল কলেজকে বলা হয়, আপনারা তো হাসপাতালে স্বৈরতন্ত্র চালান। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে একটি যন্ত্র চেয়েছিল। তাদের বলা হয়, আপানাদের কাছে বর্তমানে যে যন্ত্র রয়েছে সেটি আপনারা ব্যবহার করেন দিনে ৩-৪ ঘণ্টা। তার পরে ১৬ কোটি টাকা দামের যন্ত্র আপনাদের কেন দেব? এনআরএসকে বলা হয়, এত স্টাফ থাকা সত্বেও হাসপাতাল কেন নোংরা?
ডাক্তারদের খারাপ ব্যবহারের বিষয়টিও উঠে এসেছে বৈঠকে। জরুরি বিভাগে এসে রোগীদের দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। আউটডোরেও বহুক্ষণ বসে থাকেন রোগী। একজন ডাক্তার থাকার কথা। তাঁর জায়গায় অন্য ডাক্তার রোগী দেখেন। চারজনের কাজ এক জনকে করতে হয়। হাসপাতালের ইন্ডোর অপরিচ্ছন্ন, বহু জায়গায় অব্য়বস্থা। ওইসব আলোচনা হওয়ার পর স্বাস্থ্যসচিব বলেন, শুধুমাত্র সিনিয়র ডাক্তাররাই নন, প্রসাশনিক কর্তাদেরও হাসপাতালে ইভিনিং রাউন্ড দিতে হবে। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে সারপ্রাইজ ভিডিট করতে হবে। দেখতে হবে রোগীরা সেখানে ঠিকঠাক পরিষেবা পাচ্ছেন কিনা। জরুরি বিভাগে গিয়ে দেখতে হবে সেখানে ঠিকঠাক কাজ হচ্ছে কিনা। হাসপাতাল চত্বর ও ইন্ডোর সাফসুতরো রয়েছে কিনা তা দেখতে হবে। এসব একাধিক নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। সবেমিলিয়ে শুক্রবার কার্যত দিশেহারা হয়ে পড়েন হাসপাতালের কর্তারা। যে হাসপাতালে যে সমস্যা তা উল্লেখ করেই কর্তাদের নিশান করেন স্বাস্থ্যসচিব। তিনি সাফ বলে দান ওইসব মস্যার সমাধার করতেই হবে।