“কলকাতা লন্ডন হয়নি, তৃণমূলের রাজত্বে মালদা আমেরিকা হয়েছে,” স্কুলে বন্দুকবাজের হামলার ঘটনায় সরব সুকান্ত

মুখ্যমন্ত্রী কলকাতাকে লন্ডন করবেন বলেছিলেন। তৃণমূলের রাজত্বে কলকাতা লন্ডন না হলেও মালদা আমেরিকা হয়ে গিয়েছে। বুধবার মালদার একটি স্কুলে পড়ুয়াদের পণবন্দি করে
বন্দুকবাজের হামলার ঘটনায় এমনটাই প্রতিক্রিয়া দিলেন সুকান্ত মজুমদার। কালিয়াচক, কালিয়াগঞ্জ, মালদা একের পর এক ঘটনায় রাজ্যে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির বেহাল অবস্থার নজির বলেই দাবি করে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরব হন বিজেপি রাজ্য সভাপতি।

কর্নাটকে প্রবাসী বাঙালীদের জন্য ভোট প্রচার সেরে কলকাতায় ফিরে বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মালদার ঘটনা নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেন, আমেরিকাতে এরকম বন্দুক বাজের তাণ্ডব হয় শুনেছিলাম। এখন পশ্চিমবঙ্গের গ্রামে গঞ্জেও সেটা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেখুন বাংলার আইন শৃঙ্খলার কি পরিস্থিতি। সুকান্ত বলেন, কালিয়াগঞ্জের পর কালিয়াচকেও ঘটল হার হিম করা ঘটনা। কালিয়াগঞ্জের যে ভিডিও দেখা গেল তাতো রীতিমতো আতঙ্কিত। পুলিশকে পেটাচ্ছে জনতা। আর মালদহে দেখা গেল স্কুলের ভেতর বন্ধুকবাজ ঢুকে পড়েছে। তাহলেই বুঝুন রাজ্যের কি ভয়ানক পরিস্থিতি।

এদিন ফের সুকান্ত মজুমদার কালিয়াগঞ্জ কালিয়াচক দুটি ঘটনাতেই পৃথক ভাবে সিবিআই তদন্ত চান। দুটি ক্ষেত্রে পরিবার পুলিশের উপর কোনো আস্থা রাখতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন তিনি। তারা সিবিআই তদন্ত চাইছে।

বিজেপি নেতার কথায়, পুলিশকে এতটাই রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহার করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, যে তারা আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দলের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়ে জানান, দুটি ক্ষেত্রেই আমরা পরিবারের দাবির সঙ্গে রয়েছি। পুলিশের উপর বাংলার মানুষের কোনো আস্থা নেই। তাই একের পর এক ঘটনায় সিবিআই তদন্ত হচ্ছে। এক্ষেত্রে সিবিআই দাবি করেছে পরিবার, আমরাও সিবিআই দাবি করেছি।

কালিয়াগঞ্জে পুলিশের উপর আক্রমণের ঘটনায় তিনি বলেন, পুলিশের কি করুণ পরিস্থিতি দেখুন। ভাইরাল ভিডিও দেখলেই বোঝা যাচ্ছে পুলিশের করুন অবস্থা, পুলিশ সাধারণ মানুষের কাছে প্রাণ ভিক্ষা চাইছে। মানুষের এই আক্রোশ কেন? ভাববেন না? তিনি বলেন, পুলিশের প্রতি আক্রোশ আদতে তৃণমূল নেতা কর্মীদের প্রতি, প্রশাসনের প্রতি। তৃণমূল নেতা কর্মীদের তারা হাতের কাছে পাচ্ছেন না, পুলিশকে হাতের কাছে পেয়ে তাই মারধর করেছেন।

তিনি আরো বলেন, নিচু তলার পুলিশ কর্মীদের তো কোনো দোষ নেই। তারা তাদের ডিউটি করেন। আধিকারিদের দেওয়া নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করেন। তৃণমূল নেতা কর্মীরা এই অবস্থার জন্য দায়ী।

কালিয়াগঞ্জ, কালিয়াচকের মতো পরপর ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়েছে রাজ্যের পরিস্থিতি। ফলে নিজের দিল্লি সফর কাটছাঁট করে রাজ্যে ফিরে এসেছেন রাজ্যপাল। রাজ্য সরকারের কাছে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট চেয়েছেন তিনি। এই প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদার বলেন, রাজ্যপালের এই সক্রিয়তা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বলেই আমি মনে করি। না হলে ধীরে ধীরে রাজ্যে আর আইনের শাসন বলে কিছু থাকবে না। রাজ্য প্রশাসন পুরো ভেঙে পড়তে চলেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.