কলকাতা পুলিশের একটি দল দিল্লি থেকে পাকড়াও করল আরও দু’জন নাইজেরীয়কে। এক কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগে তদন্তে নেমে নাইজেরীয়দের একটি চক্রের হদিস আগেই পেয়েছিল পুলিশ। এর আগে একই ঘটনায় আরও তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাঁরাও সকলে ছিলেন নাইজেরিয়ার নাগরিক। বুধবার দিল্লির পালাম থানা এলাকায় হানা দিয়ে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করা হল। কলকাতা পুলিশের তদন্তকারী দলটির নেতৃত্বে ছিলেন ইনস্পেক্টর সোমা মাইতি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র নাম করে কলকাতার এক বাসিন্দার কাছ থেকে মোট ১ কোটি ১০ লক্ষ ৪১ হাজার ২৫০ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। গত মে মাসে এই সংক্রান্ত অভিযোগ জমা পড়ে থানায়। তার পর থেকে পুলিশ তদন্ত চালাচ্ছে। অভিযোগ, হু-এর পাশাপাশি ব্রিটেনের এক বেসরকারি ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থার নাম করেও যোগাযোগ করা হয়েছিল ওই ব্যক্তির সঙ্গে। ভুয়ো ইমেল, হোয়াট্সঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট খুলে, ভুয়ো নথি তৈরি করে তাঁকে টাকা বিনিয়োগের টোপ দেওয়া হয়েছিল। টাকা দিয়ে ফেলার পরে অভিযোগকারী বুঝতে পারেন, তিনি প্রতারিত হয়েছেন।
তদন্তকারীরা জানতে পারেন, যে সমস্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ওই টাকা গিয়েছে, তার সঙ্গে যুক্ত মোবাইল নম্বরগুলি দিল্লির পালাম থানা এলাকায় সক্রিয়। পরে সেগুলি বন্ধও করে দেওয়া হয়। আইপি অ্যাড্রেস, সিডিআর এবং আইএসপি তথ্য সংগ্রহ করে কলকাতা পুলিশ অভিযুক্তের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়। এর পর দিল্লিতে অভিযান চালায় তদন্তকারী দল। ইনস্পেক্টর সোমা ছাড়াও ওই দলে ছিলেন সার্জেন্ট শান্তনু গায়েন এবং চার কনস্টেবল— জ়েড হোসেন, কে কর্মকার, এ সাহা এবং এম জমাদার। দিল্লি পুলিশও তাঁদের সহায়তা করেছিল।
দক্ষিণ দিল্লির পালামে একটি ভবনের দোতলার ঘরে দুই অভিযুক্তের খোঁজ মেলে। তাঁরা হলেন এজিকে বেঞ্জামিন নওয়াবুনওয়ান্নে এবং বিলিভ ওন্যেচেলেম ঝন। বুধবার বিকেল ৫টা থেকে ৫টা ১০ মিনিটের মধ্যে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। অভিযোগ, পুলিশ দেখে তাঁরা পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। সেই সময় ধস্তাধস্তিতে এক কনস্টেবল জখম হন। তবে দু’জনকেই আটক এবং পরে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ১২টি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল, দু’টি কি-প্যাড মোবাইল, একটি ল্যাপটপ, একটি রাউটার, দু’টি ব্রিটেনের সিম কার্ড, চারটি এটিএম কার্ড এবং একটি পেন ড্রাইভ। নথি জাল করার কাজ ওই ঘরে বসেই চলত বলে অনুমান তদন্তকারীদের।

