কেকের অনুষ্ঠানে মাত্রাতিরিক্ত ভিড় ছিল। এসিও ঠিকঠাক কাজ করছিল। আড়াই হাজারের বেশি দর্শক চলে এসেছিলেন। তবে ভিড় হঠাতে অগ্নি নির্বাপকের ব্যবহার হয়েছে। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে এমনই জানালেন কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। তিনি জানান, মাত্রাতিরক্ত ভিড়ের মতো এমন ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে ব্যাপারে নজর রাখা হবে। অনুষ্ঠান স্থলে অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা থাকবে। বিনীতের সাংবাদিক বৈঠকের পরে পরেই তৃণমূলের পক্ষে কুণাল ঘোষ কেকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বাংলার ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ, প্রশাসন গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখছিলেন। বহু মানুষ ওই অনুষ্ঠানটিতে ছিলেন। একটা দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে। এখন ভাবমূর্তি নষ্ট করার খেলা চলছে। কেকে-র ম্যানেজার বলছেন, তাঁর একটি শারীরিক সমস্যা ছিল। কিন্তু তিনি সেটা নিজেই জানাননি। কেউ তো এমন চায়নি। কেকে নিজে মুখ ফুটে কাউকে বলেননি। তাতে কার কী করার আছে। এখন কেউ কেউ বাংলার ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্যও নেমে পড়েছেন।’’
পুলিশ কমিশনার জানান, নজরুল মঞ্চে সে দিন পুলিশ যথেষ্টই মোতায়েন করা হয়েছিল। এক জন ওসি এবং তিন জন ইন্সপেক্টর উপস্থিত ছিলেন। কলকাতা পুরসভা থেকে তাঁরা জানতে পারেন বাতানুকূল যন্ত্র ঠিকঠাক কাজ করছিল। তবে এ বার থেকে যে কোনও অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠানের সময় অ্যাম্বুল্যান্স রাখা হবে। স্থানীয় হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হবে। তা ছাড়া, কত জন দর্শক সংশ্লিষ্ট অনুষ্ঠানে আসছেন সে দিকে নজর রেখে আসনের বন্দোবস্তও থাকতে হবে। পুলিশ কমিশনারের সংযোজন, কেকে-র অনুষ্ঠানে সে দিন বিশাল ভিড় হলেও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
গায়ক কেকে-র মৃত্যুর ঘটনায় তীব্র বিতর্ক চলছে। শুক্রবারই এ নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন গায়ক রুপঙ্কর। কারণ, মঙ্গলবার কেকে-র অনুষ্ঠানের দিনই তাঁর একটি ফেসবুক ভিডিয়ো নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। রুপঙ্কর জানান, কেকে-র প্রতি তাঁর ব্যক্তিগত বিদ্বেষ নেই। তিনি যা বলেছিলেন, তা সমষ্টিগত হতাশা থেকে বলেছেন।
অন্য দিকে, এ নিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্ক সম্পর্কে কলকাতার পুলিশ কমিশনার, গুরুদাস কলেজের অধ্যক্ষ এবং নজরুল মঞ্চ কর্তৃপক্ষকে আইনি চিঠি দেন আইনজীবী সৌম্যশুভ্র রায়। সৌম্যশুভ্র জানান, ‘সঠিক পদক্ষেপ’ না করলে আগামী সপ্তাহে কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করবেন তিনি। চিঠিতে সৌম্যর দাবি, পুলিশ, প্রশাসন, কলেজ এবং নজরুল মঞ্চ কর্তৃপক্ষের কার বা কাদের ‘অবহেলার জন্য’ কেকের মৃত্যু হয়েছে তা সুনির্দিষ্ট ভাবে চিহ্নিত করা প্রয়োজন। তিনি লিখেছেন, ‘কেকের মৃত্যুর আসল কারণ খুঁজে বার করা হোক।’ এই প্রেক্ষিতে সাংবাদিক বৈঠক করেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার।