KK death: আয়োজকরা একটু সুশৃঙ্খল হলে হয়তো এ ভাবে মরতে হত না কেকে-কে: সোহম

আপনিই একমাত্র বাঙালি নায়ক, যিনি কেকে-র বাংলা গানে ঠোঁট মিলিয়েছিলেন…

সোহম: হ্যাঁ, ‘ফান্দে পড়িয়া বগা কান্দে রে’ ছবিতে। ২০১১ সালের ছবিতে আমি আর শ্রাবন্তী জুটি ছিলাম। জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সুরে গানটা ছিল, ‘আকাশের নীলে মেঘে ঢাকা তারা খুঁজে পাওয়া।’ আজ তা আমার গর্বের জায়গা। কেকের গায়কি নিয়ে কী বলব! ছোট থেকে বড় হয়েছি ওঁর গান শুনে। সেই কেকে-ই এ ভাবে আচমকা হারিয়ে গেলেন। ভীষণ দুঃখ হচ্ছে। এমনটা তো কাম্য ছিল না।

কেকে-র প্রতিভা কি টলিউড বুঝতে পারল না?

সোহম: টলিউড ইন্ডাস্ট্রির এক জন হয়ে বলব, কেকে-কে দিয়ে আরও বাংলা গান গাওয়ানো যেতেই পারত। এতে টলিউডই সমৃদ্ধ হত। ওঁর গাওয়া গানে বাংলা উচ্চারণ এক বারও বুঝতে দেয়নি, কেকে নিজে বাঙালি নন। অনুরাগীরা ওঁর থেকে অসংখ্য হিন্দি গান উপহার পেয়েছেন। বাংলা ছবিতে গাইলে একই ভাবে অনেক ভাল বাংলা গানও হয়তো গায়কের ঝুলিতে থাকত। অবশ্য বাংলা ছবির পরিচালক বা প্রযোজকদের ভাবনায় কী ছিল, জানি না।

রূপঙ্কর বাগচীর মন্তব্য নিয়ে কিছু বলবেন?

সোহম: এই ঘটনা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। কার সঙ্গে কার কেমন সম্পর্ক, তা নিয়ে আমাদের নাক না গলানোই উচিত। কিন্তু নেটমাধ্যমের মতো শক্তিশালী জায়গায় প্রকাশ্যে বক্তব্য রাখতে হলে তো পরস্পরকে ন্যূনতম সম্মান দেখাতেই হবে। বিশেষত দু’জনে যখন একই পেশায় এবং উভয়েই স্বনামধন্য। রূপঙ্করদার থেকে এই ব্যবহার আশা করিনি।

এই পোস্টের কারণেই শিল্পী কটাক্ষের শিকার, কেকে-র মৃত্যুর পরে খুনের হুমকি পাচ্ছেন!

সোহম: আবারও বলব, অনভিপ্রেত ঘটনা। এটা আমাদের সংস্কৃতি নয়। রূপঙ্করদার পোস্ট এবং কেকে-র মৃত্যু পুরোটাই কাকতালীয়। তাকে জুড়ে দিয়ে এক জন শিল্পীকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে আবারও ভুল করছেন সবাই। রূপঙ্করদা যদি ফোনে খুনের হুমকি পেয়ে থাকেন, তা হলে বলব প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। সব রকম সাহায্য পাবেন।

নজরুল মঞ্চের অব্যবস্থার দিকে আঙুল উঠছে, শিল্পী সোহম চক্রবর্তী বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর নজরে আনবেন ?

সোহম: আমি কিন্তু নজরুল মঞ্চে কোনও অব্যবস্থা দেখতে পাচ্ছি না। আমার সাউথ সিটি কলেজের অনুষ্ঠান এখানে হয়েছিল। সে বারেও কেকে এসেছিলেন। আমরা সবাই বসে অনুষ্ঠান দেখেছি। তাতেই ঘেমে স্নান করে গিয়েছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৌজন্যে এখন সেখানে বসার সুবন্দোবস্ত, বাতানুকূল পরিবেশ। শুধু নজরুল মঞ্চ নয়, সমস্ত সভাগৃহই ঢেলে সাজিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। যা শুনছি, তাতে মনে হচ্ছে কলেজ উদ্যোক্তারাই বিষয়টি সামলাতে পারেননি। যেখানে হাজার তিনেক লোক ধরে, সেখানে দ্বিগুণ ভিড়। দরজা বন্ধ করা যাচ্ছিল না। ফলে, বাতানুকূল যন্ত্রও বন্ধ। এমনিতেই দমবন্ধকর পরিস্থিতি। আয়োজকদের আরও সুশৃঙ্খল হওয়া উচিত ছিল। মঞ্চের ভিড় হাল্কা করতে পারলে পরিস্থিতি অনেকটা আয়ত্তে আসত। নির্দিষ্ট সংখ্যক দর্শক নিয়ে অনুষ্ঠান করলে এই অঘটন ঘটতই না হয়তো।

নেটমাধ্যমে ছয়লাপ, এই দুর্ঘটনা বাংলার লজ্জা! গান স্যালুট কি সেটাই ঢাকার প্রয়াস?

সোহম: কখনওই নয়। এ রকম যদি কোথাও বলা হয়ে থাকে, তা হলে সেটা অপব্যাখ্যা হচ্ছে। গান স্যালুট কোনও কিছু আড়াল করতে নয়, এক জন শিল্পীকে তাঁর প্রাপ্য মর্যাদা দিতেই মুখ্যমন্ত্রীর এই পদক্ষেপ। কেকে তাঁর কাজ, তাঁর কীর্তির জন্যই এই সম্মান পেলেন। বাংলা এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব সময়েই শিল্পীদের সম্মান করেন। পাশাপাশি, দুর্ঘটনা যে কোনও জায়গাতেই ঘটতে পারে। গাইতে গাইতেই মৃত্যু আসুক, এমনটা হয়তো যে কোনও গায়কের কাছেই কাম্য। কিন্তু বাস্তবে সত্যিই তেমন ঘটলে অনুরাগীদের কাছে তা প্রচণ্ড যন্ত্রণার। হয়তো তারই প্রতিক্রিয়া এই ধরনের মন্তব্য। একে ‘লজ্জা’ আখ্যা দেওয়া ঠিক নয়। তবে আয়োজক কড়া পদক্ষেপ নিলে এমনটা হয়তো ঘটত না, সেটাও ঠিক। কলকাতার বুকে এই অঘটন সত্যিই মর্মান্তিক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.