আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে গ্রেফতার ব্যবসায়ী কৌস্তুভ রায়। সোমবার গভীর রাতে তাঁকে গ্রেফতার করেছে ইডি। তার আগে দীর্ঘ ক্ষণ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
ব্যবসায়ী কৌস্তুভ দীর্ঘ দিন ধরেই তৃণমূলের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত। যদিও তিনি তৃণমূলের আনুষ্ঠানিক সদস্য নন বলেই খবর। তৃণমূলের এক প্রথম সারির নেতার কথায়, ‘‘কৌস্তুভ আমাদের হিতৈষী বলা ভাল। সম্ভবত ওঁর গ্রেফতারির নেপথ্যেও সেই রাজনৈতিক কারণই রয়েছে। যখন বেঙ্গালুরুতে বিজেপিকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য বিরোধীদের বৈঠক হচ্ছে, সেই সময়ই কৌস্তুভকে ইডির গ্রেফতার করা সেই দিকেই ইঙ্গিত করছে।’’ এখন দেখার, কৌস্তুভের গ্রেফতারি নিয়ে তৃণমূলের তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয় কি না।
কৌস্তুভের বিরুদ্ধে এর আগেও অনেক বার আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তাঁর অফিস এবং বাড়িতে কয়েক মাস আগেই হানা দিয়েছিল আয়কর দফতর। প্রায় দিন রাত এক করে তল্লাশি চালিয়েছিলেন তদন্তকারী আধিকারিকেরা। সে সময় কৌস্তুভের কাছ থেকে বেশ কিছু নথি উদ্ধার করা হয়েছিল বলে সূত্রের খবর। কিন্তু তখন তাঁর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।
ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, কৌস্তুভকে সোমবার সকালে তলব করা হয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় সংস্থাকে চিঠি দিয়ে জানান, সকালে হাজিরা দেওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। বিকেলে ইডির সঙ্গে দেখা করার সময় হবে বলেও জানিয়ে দিয়েছিলেন কৌস্তুভ। তাঁর বক্তব্য মেনে নিয়ে ইডি তাঁকে বিকেল ৪টেয় হাজিরা দিতে বলেছিল।
সোমবার বিকেলেই ইডি দফতরে ঢুকেছিলেন কৌস্তুভ। টানা জিজ্ঞাসাবাদ করার পর রাত ১টা নাগাদ তাঁকে গ্রেফতার করা হয় বলে ইডি সূত্রে খবর। কৌস্তুভের মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করেছেন কেন্দ্রীয় আধিকারিকেরা।
কৌস্তুভকে সোমবার বেশ কিছু নথি নিয়ে হাজিরা দিতে বলেছিল ইডি। সূত্রের খবর, সেই নথিতে অসঙ্গতি মিলেছে। সেই কারণেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়ে থাকতে পারে। প্রসঙ্গত, কৌস্তুভ একটি টিভি চ্যানেলের কর্তা। বিরোধীদের দাবি, তিনি তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ। বিভিন্ন সময় তাঁকে শাসকদলের নেতানেত্রীদের সঙ্গে দেখা গিয়েছে। প্রকাশ্যে না থাকলেও দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচীতে পরোক্ষ ভাবে সর্বদাই যুক্ত থাকতেন কৌস্তুভ। রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়োগ মামলায় যখন কেন্দ্রীয় সংস্থা প্রথম বার তলব করেছিল, তখন পার্থের সঙ্গে দেখা গিয়েছিল কৌস্তুভকেও।