বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চ থেকে নিয়োগ সংক্রান্ত মামলা সরানোর জন্য হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের এই নির্দেশ প্রকাশ্যে আসার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়লেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। শুক্রবার শহরে মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির পাদদেশে অবস্থানরত উচ্চ প্রাথমিকের বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীরা হাতে পোস্টার নিয়ে বিক্ষোভ দেখান। অধিকাংশ পোস্টারে লেখা ছিল, “বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে ফেরত চাই।”
অবস্থানরত চাকরিপ্রার্থীদের বক্তব্য, নিয়োগ দুর্নীতিতে ক্ষমতাবানদের বিরুদ্ধে শিরদাঁড়া সোজা রেখে লড়াই করে গিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশেই অবৈধ উপায়ে চাকরি পাওয়া প্রার্থীদের চাকরি গিয়েছে বলেও জানান তাঁরা। শীর্ষ আদালতের নির্দেশে তাঁরা হতাশ হয়েছেন বলেও জানিয়েছেন ওই চাকরিপ্রার্থীরা।
জনৈক চাকরিপ্রার্থী রিয়া রায়ের কথায়, ‘‘বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় আমাদের কাছে ভগবান। উনি থাকলে দুর্নীতিগ্রস্তরা জেলে যাবেন। আমার মতো বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীরা সুবিচার পাবেন। যে বিচারপতিই এই মামলা শুনুন না কেন, আমরা চাইব ওঁর শিরদাঁড়াটা যেন স্যর গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো সোজা থাকে।” উচ্চ প্রাথমিকের ইন্টারভিউ বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থী বলে পরিচয় দিয়ে স্বদেশ গোস্বামী বলে এক জন বলেন, “উনি আমাদের কাছে ভগবান ছিলেন। ওঁর জন্যই আমরা স্বপ্ন দেখেছিলাম যে, দুর্নীতিকারীরা শাস্তি পাবে আর যোগ্য প্রার্থীরা চাকরি পাবে।” তবে একই সঙ্গে ওই চাকরিপ্রার্থীরা জানান, তাঁরা লড়াই থামাবেন না। ‘বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদবে না’ বলে দাবি করে তাঁরা বলেন, “প্রয়োজনে আগুন জ্বলবে, তবু আমরা এই লড়াই ছাড়ব না।”
শুক্রবার শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ কলকাতা হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে এই মর্মে নির্দেশ পাঠায় যে, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নিয়োগ সংক্রান্ত যে সব মামলা শুনছিলেন, সেগুলি শোনার জন্য অন্য বিচারপতি নিয়োগ করা হোক। তবে আইনজীবী মহলের দাবি, শুধুমাত্র তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের করা মামলা থেকেই সরানো হল, না কি নিয়োগ সংক্রান্ত সব মামলা থেকে, তা নির্দেশের কপি হাতে এলে স্পষ্ট হবে।