সাত সুরে নতুনভাবে শুরু হতে চলেছে জি বাংলার খ্যাতনামা সংগীত রিয়েলিটি শো সারেগামাপা। শোয়ের সঞ্চালক হিসেবে এবার আর দেখা যাবে না যিশু সেনগুপ্তকে, বরং তাঁর পরিবর্তে নতুন সঞ্চালক হিসেবে মঞ্চে অবতরণ করতে চলেছেন অভিনেতা আবির চট্টোপাধ্যায়। যদিও এই বিষয় প্রকাশ্যে আসার পরই অনেকে কিন্তু-কিন্তু করেছিলেন, আবিরও এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন যে, “সবাই তো আমাকে আর যিশুকে লড়িয়ে দিতে চেয়েছিল!” তবে সেসব এখন অতীত। নতুন সঞ্চালককে ইতিমধ্যেই স্বাগত জানিয়েছেন রিয়ালিটি শোয়ের দর্শককুল। তবে তার রেশ কাটতে না কাটতেই আরেক নতুন বিতর্ক। এবার শোয়ের বিচারক নিয়ে। বাংলা সংগীত রিয়েলিটি শো জি সারেগামাপা-য় কেন বিচারকের আসনে মিকা সিং (Mika Singh)? প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।
এর আগেও মুম্বইয়ের একাধিক শিল্পী সংশ্লিষ্ট চ্যানেলের সংগীত রিয়ালিটি শোয়ের বিচারকের আসনে বসেছেন। কিন্তু মিকা সিং নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। বিচারক পদের জন্য বাংলায় কি সংগীত শিল্পী কম পড়েছিল? অনেকেই ইতিমধ্যেই সেই প্রশ্ন তুলেছেন। আরেকটু খোলসা করে বলতে গেলে, সারেগামাপা’র বিচারক হিসেবে মিকাকে না-পসন্দ বাংলা সংগীতমহলের। সংগীতকার ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত, নচিকেতা চক্রবর্তী থেকে আরতি মুখোপাধ্যায়ের মতো বিশিষ্ট শিল্পীরা ইতিমধ্যেই এক সংবাদমাধ্যমের কাছে এই বিষয়ে মুখ খুলেছেন। নতুন প্রজন্ম কী শিখবে মিকার কাছ থেকে? প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।
ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্তের সাফ উত্তর, “বাংলা গানের জগতের মানুষ হিসেবে চূড়ান্ত অপমানিত বোধ করছি!” সংবাদমাধ্যমের কাছে তাঁর প্রতিক্রিয়া, রবীন্দ্রনাথ, লালনের হাত ধরে যে বাংলা গানের যে ঐতিহ্য, এবার সেখানে কিনা বিচারক হয়ে আসছেন মিকা! তিনি নাকি ভাবতেই পারছেন না। ইন্দ্রদীপ কড়া প্রতিবাদ, মুম্বই কিংবা দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রির সংগীত রিয়ালিটি শোয়ে কিন্তু বাইরের রাজ্য থেকে শিল্পীরা যান না বিচারক হিসেবে, তাহলে বাংলায় কেন এর অন্যথা হবে? গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। বাংলার শিল্পীরা কি তাহলে সত্যিই কোনও প্রতিবাদ না করে সব কিছু মুখ বুজে মেনে নেন? সেই প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যায়।
চ্যানেলের টিআরপি-ই শেষ কথা। সেই মন্ত্রের পাঠ অনেক আগেই পড়েছে ইন্ডাস্ট্রির ব্যক্তিরা। মিকা সিংকে বাংলা গানের রিয়ালিটি শোয়ের বিচারক করে আনাটাও কি তাহলে, সেই কারণেই? সেই সম্ভাবনাও কিন্তু উড়িয়ে দিচ্ছেন না আরতি মুখোপাধ্যায় কিংবা নচিকেতা চক্রবর্তীর মতো শিল্পীরা।
প্রবীণ সংগীতশিল্পী আরতিদেবীও স্পষ্ট কথা, “শুধু এখন নয়, বাংলার লোকের বরাবরের অভ্যেস মুম্বই থেকে কেউ এল তাঁকে নিয়ে মাতামাতি করা!” নচিকেতাও টিআরপি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর কথায়, আমাদের দেশে অনেক মানুষের মধ্যেই মনুষ্যত্ব নেই, তাঁদের টিআরপি যদি বেশি হতে পারে, তাহলে মিকা সিংকেই বা কেন টিআরপির কথা মাথায় রেখে বিচারকের আসনে বসানো হবে না! লোকে তো আজকাল জাকজমকই খোঁজে। সারেগামাপা’র বিচারকের আসনেও তাঁরা মিকাকে সেভাবেই দেখবেন সেজেগুঁজে।