জমি জট থেকে মাঝেরহাট সেতু বিপর্যয় এবং অর্থ–সহ একাধিক সমস্যা দেখা দেওয়ায় গতি হারিয়েছিল জোকা–এসপ্ল্যানেড মেট্রো প্রকল্প। গোটা রুটের (প্রায় ১০ কিমি) কাজ শেষ হতে এখনও কয়েক বছর লাগবে। দেশের আর কোনও মেট্রো প্রকল্প তৈরি করতে এত সময় লাগেনি। তা নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়ে রেলমন্ত্রক।
ঠিক ১২ বছর আগে এই মেট্রো রুটের শিলান্যাস করেছিলেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এবারের বড়দিনে হয়ত কলকাতাবাসীর কাছে সেটাই বড় উপহার হয়ে দেখা দিতে চলেছে। সব ঠিক থাকলে সম্ভবত শনিবারই আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হবে জোকা–তারাতলা মেট্রো রুটের। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ওইদিন কলকাতায় আসছেন পূর্বাঞ্চলীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে যোগ দিতে। নবান্ন সভাঘরে ওই বৈঠকের পরই অমিত শাহ নয়া মেট্রো রুটের উদ্বোধন করতে যাবেন বলে সূত্রের খবর।
ঠিক কী জানা যাচ্ছে? মেট্রো ভবন সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সময় পাওয়া গিয়েছে। তাই এই রুটের উদ্বোধনের যাবতীয় আয়োজন করা হচ্ছে। যদিও কলকাতা মেট্রো রেলের জেনারেল ম্যানেজার অরুণ অরোরা মুখে কুলুপ এঁটেছেন। এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘মেট্রো উদ্বোধন নিয়ে এখনও নিশ্চিত কোনও খবর নেই। তবে আমরা চাইছি এটা বড়দিনের উপহার হোক রাজ্যবাসীর কাছে।’ সূত্রের খবর, রাত পোহালেই শনিবার। আর সেদিন নবান্ন সভাঘরে পূর্বাঞ্চলীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক শেষে নয়া মেট্রো রুটের উদ্বোধন করতে যাবেন অমিত শাহ। ২০১০ সালে রেলমন্ত্রী থাকাকালীন এই প্রকল্পের শিলান্যাস করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত থাকবেন কি না, সেটা জানা যায়নি।
আর কী জানা যাচ্ছে? জমি জট থেকে মাঝেরহাট সেতু বিপর্যয় এবং অর্থ–সহ একাধিক সমস্যা দেখা দেওয়ায় গতি হারিয়েছিল জোকা–এসপ্ল্যানেড মেট্রো প্রকল্প। গোটা রুটের (প্রায় ১০ কিমি) কাজ শেষ হতে এখনও কয়েক বছর লাগবে। দেশের আর কোনও মেট্রো প্রকল্প তৈরি করতে এত সময় লাগেনি। তা নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়ে রেলমন্ত্রক। তাই মাত্র সাড়ে ছ’ কিমি চালু করে মুখ রক্ষা করতে চাইছে রেল। এই মেট্রো প্রকল্প ঘোষণার সময় আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছিল ২,৬১৯ কোটি টাকা। কিন্তু ১৩ বছর পর সেই খরচের মাত্রা দ্বিগুণ বেড়ে গিয়েছে।
কেমন হচ্ছে জোকা–তারাতলা মেট্রো রুট? মেট্রো সূত্রে খবর, এই পর্যায়ে থাকছে মোট ছ’টি স্টেশন। এই স্টেশনগুলি হল— জোকা, ঠাকুরপুকুর, সখেরবাজার, বেহালা চৌরাস্তা, বেহালা বাজার এবং তারাতলা। এই মেট্রো পথে এখনও স্বয়ংক্রিয় সিগন্যালিং ব্যবস্থা বসানো হয়নি। তাই পুরোপুরি মেট্রো চালানো যাবে না। ‘ওয়ান মেট্রো সার্ভিস’ দিয়ে আপাতত এই রুট চালু করা হচ্ছে। অর্থাৎ একটি মাত্র ট্রেন যাত্রী নিয়ে তারাতলা থেকে জোকা যাবে। সেটিই আবার উল্টোপথে ফিরে আসবে তারাতলায়।