ভোট আসে ভোট যায়। ওরা থাকে যে-তিমিরে সেই তিমিরেই। গালভরা প্রতিশ্রুতি, দেওয়াললিখন– কোনও কিছুই কাজে লাগে না। নিজের বাপ-ঠাকুদার শিল্প ছেড়ে পরিযায়ী শ্রমিকে পরিণত হয়েছেন তাঁরা। কোনও রাজনৈতিক দল বা নেতা, এমনকি প্রশাসন– কেউই তাঁদের নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামায় না বলে দাবি তাঁদের। ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইলের ব্লকের কয়েকশো কুম্ভকার পরিবার।
ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইলের কুম্ভকরদের মাথায় হাত। বিক্রি নেই। কষ্ট করে তৈরি করা মাটির হাঁড়ি, কলসি, টব থেকে শুরু করে বিভিন্ন জিনিসপত্র ডাঁই হয়ে পড়ে আছে, লোক আসছে না কিনতে। এর পাশাপাশি কিছু ফ্যান্সি জিনিসও তাঁরা তৈরি করেন। কিন্তু তা করলেও মার্কেটিংয়ের অভাবে সেসব বিক্রি হয় না।
ফলে টান পড়েছে রোজগারে। ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইল ব্লকের নয়াঁগা গ্রামে বাস করেন ১০০ থেকে ১৫০টি কুম্ভকার পরিবার। মাটির তৈরি জিনিসপত্র বিক্রি করেই চলে তাঁদের জীবনযাপন। তবে, বর্তমানে রুজি-রোজগারে টান পড়েছে ওই কুম্ভকার পরিবারগুলির। বাজারে বেড়ে চলেছে প্লাস্টিকের জিনিসপত্রের ব্যবহার ও বিক্রি। তাই মাটির তৈরি জিনিসপত্রের ব্যাবহার কমেছে। ফলে, কমেছে সেসবের বিক্রির হারও।
আর তাই বাড়ছে কুমোরদের সংসারে টানাটানি। মৃৎশিল্পীরা উন্মুক্ত বাজার প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে না পেরে প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছেন। অত্যাধুনিক প্লাস্টিক, অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি জিনিসপত্রের দাপটে এই শিল্প প্রায় বিলুপ্ত। ফলে জেলার প্রতিভাবান মৃৎশিল্পীরা অর্থাভাবে জীবন কাটাচ্ছেন। কেউ কেউ ইতোমধ্যে ভিন্ন পেশায় চলে গিয়েছেন। নয়াঁগা গ্রামে বাস করা কুম্ভকার পরিবারগুলি চায় তাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিক প্রশাসন। তবে, তাদের দাবি, প্রশাসন বিষয়টা দেখবে বলে কথা দিলেও এখনও সেভাবে কিছু করা হয়নি তাদের জন্য।