ট্রুথ ইজ স্ট্রেঞ্জার দ্যান ফিকশন। ‘থ্রি ইডিয়টস’ ছবিতে ভিডিয়োকলের মাধ্যমে সন্তান প্রসব দেখানো হয়েছিল। সেই অসম্ভব দৃশ্যের অনেকেই যেমন প্রশংসা করেছিলেন, অনেকে বলেছিলেন গাঁজাখুরি, বড্ড বেশি সিনেম্যাটিক। কিন্তু তাঁরা এবার কী বলবেন? এবার বাস্তবে প্রায় একই ঘটনা ঘটল। জম্মু-কাশ্মীরে এক চিকিৎসক হোয়াটসঅ্যাপ কলের মাধ্যমে প্রসব করালেন।
কেন এরকম করতে হল?
ব্লক মেডিক্যাল অফিসার ড. মির মহম্মদ শফি জানিয়েছেন, শুক্রবার রাতে কেরান পিএইচসি (বা কেরান প্রাইমারি হেলথ সেন্টারে)-তে জটিল নানা সমস্যা জর্জরিত এক প্রসূতিকে ভর্তি করনো হয়। কিন্তু শীতের কারণে এই হেলথ সেন্টারটি প্রায় বিচ্ছিন্ন। ফলে ওই প্রসূতিকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া জরুরি ছিল। কিন্তু একটানা তুষারপাতের ফলে এয়ার ইভাকুয়েশনের আয়োজন করা সম্ভবপর হচ্ছিল না। এদিকে পরিস্থিতি এতটাই জটিলতার দিকে যাচ্ছিল যে, তখনই প্রসব করানো জরুরি।
তখন বিকল্প এই ব্যবস্থা ভাবা হয়। ক্রালপোরা সাব-ডিস্ট্রিক্ট হাসপাতালের গাইনাকলোজিস্ট ড. পারভেইজ তখন ড. আর্শাদ সফি এবং তাঁর প্যারামেডিক্যাল স্টাফকে হোয়াটসঅ্যাপ কলে ওই ডেলিভারিটি করানোর জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন।
প্রায় ছ’ঘণ্টার দীর্ঘ কঠিন লড়াই। কিন্তু লড়াইতে শেষ পর্যন্ত ডাক্তারদের অসম্ভব জেদই জেতে। এক শিশুকন্যার জন্ম হয়। তবে মা ও শিশু উভয়কেই পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তবে তাঁদের এই মুহূর্তে কোনও বিপদ নেই। তাঁরা সুস্থ।
‘থ্রি ইডিয়টস’ ছবিতে সে ছিল এক দুঃসহ বৃষ্টির দিন। গোটা শহর জলের তলায়। গাড়ি অমিল। হেঁটে, জল ভেঙে রোগীকে নিয়ে যাওয়া দুঃস্বপ্ন। চারিদিকে নানা বিপর্যয়। নানা সংকট। সেই অচল শহরে তখন প্রসবোন্মুখ তরুণীর প্রসব করানো হয়েছিল ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে। বৃষ্টি আর তুষারের কাহিনিটুকু বাদ দিলে বাকিটা তো প্রায় একই।