নির্ধারিত বৈঠকের আগেই আমেরিকা বিদেশ সচিবের সঙ্গে আলোচনা সারলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। সেইসঙ্গে রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গেও জয়শংকরের কথোপকথন হয়েছে। যে আলোচনায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মতো বিশ্বের বর্তমান বিষয়গুলি উঠে এসেছে বলে জানিয়েছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী।
ভারত এবং আমেরিকার বিদেশমন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের মধ্যে যে বৈঠক নির্ধারিত আছে, তা আদতে গত বছরের নভেম্বরে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিভিন্ন কারণে সেই বৈঠক পিছিয়ে যায়। বৈঠকে ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতার মতো বিষয়গুলি আলোচনা করা হবে। সেই বৈঠকের আগে মঙ্গলবার টুইটারে ভারতের বিদেশমন্ত্রী জানান, ‘বর্তমান দ্বিপাক্ষিক বিষয়, ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এবং বিশ্বের সাম্প্রতিক বিষয়’ নিয়ে সোমবার রাতে মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টিন ব্লিনকেনের সঙ্গে কথা হয়েছে।ট্রেন্ডিং স্টোরিজ
পরে আরও একটি টুইটে ভারতের বিদেশমন্ত্রী জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কথা হয়েছে রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে। গত বছরের ৬ ডিসেম্বর নয়াদিল্লি ভারত-রাশিয়ার দ্বিপাক্ষিক আলোচনার ভিত্তিতে কী অগ্রগতি হযেছে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তাঁরা ‘নিয়মিত যোগাযোগ রাখার’ বিষয়ে একমত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন জয়শংকর। রাশিয়ার দূতাবাসের তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে জানানো হয়েছে, ডিসেম্বরে দ্বিপাক্ষিক সম্মেলনের পর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ‘বাস্তব বিষয়গুলি’ নিয়ে কথা হয়েছে। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য, মহাকাশের মতো বিভিন্ন বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক আরও দৃঢ় করার বিষয়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছেন তাঁরা। বিভিন্ন আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক বিষয়েও দ্বিপাক্ষিক আলোচনার সুযোগ বাড়ানোর বিষয়ে একমত হয়েছেন।
তবে আমেরিকার বিদেশ সচিব এবং রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে চিনের প্রসঙ্গে কোনও আলোচনা হয়েছে কিনা, সে বিষয়ে কিছু জানাননি ভারতের বিদেশমন্ত্রী। সেই কথোপকথনের দিনকয়েক আগে চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যমের তরফে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে দাবি করা হয়, গালওয়ান উপত্যকার নিকটবর্তী এলাকা থেকে চিনের মানুষদের ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) ফৌজিরা। লাদাখ সেক্টরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর উত্তেজনার মধ্যে চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যমের তরফে সেই ভিডিয়ো নিয়ে রীতিমতো আগ্রাসী মনোভাব নেওয়া হয়। যদিও সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, সেই ভিডিয়ো যে এলাকায় তৈরি হয়েছে, তা আগে থেকেই চিনের হাতে ছিল। গালওয়ানে যে দু’কিলোমিটার ‘বাফার জোন’ তৈরি হয়েছে, সেখানকার নয়। শুধু তাই নয়, ভিডিয়োটি পুরনো বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। কারণ ভিডিয়োয় বরফ দেখা যায়নি। বছরের এই সময় গালওয়ানের বিস্তীর্ণ অংশ তুষারের চাদরে মোড়া থাকে। বিষয়টি নিয়ে ভারতের তরফে সরকারিভাবে মুখ খোলা না হলেও মঙ্গলবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানের সূত্রের তরফে দুটি ছবি প্রকাশ করা হয়। তাতে দেখা যায়, গালওয়ানে তেরঙা হাতে নববর্ষ উদযাপন করছেন ভারতীয় জওয়ানরা।