যাদবপুরে পড়ুয়াদের অন্যায় দাবি ও ঘেরাওয়ে বিরক্ত উপাচার্য-সহ এক্সিকিউটি কাউন্সিলের সদস্যরা। পড়ুয়াদের আচরণকে একপ্রকার ‘র্যাগিং’ বলে অবস্থান-এ বসে পড়লেন উপাচার্য। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের সদস্যরা। গতকাল রাত থেকেই তাঁরা অবস্থানে বসে রয়েছেন অরবিন্দ ভবনের সামনে।
এতদিন পড়ুয়াদের ধর্না, বিক্ষোভ, মিছিল ছিল অত্যন্ত চেনা বিষয়। এবার সেই পথেইহাঁটালেন উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ। তাঁর সঙ্গে অরবিন্দ ভবনের বারান্দায় অবস্থান-এ বসেছেন সহ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, একাধিক ডিন, বিভিন্ন বিভাগের প্রধান ও এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের সদস্যরা।
কেন এমন অবস্থান? গতকাল ছিল এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠক। সেখানে পড়ুয়ারা দাবি করেন, হোস্টেলের কোন কোন পড়ুয়ারা থাকবে তা যখন নির্বাচন করা হবে তখন সেই নির্বাচন কমিটির মধ্যে হস্টেলের সদস্যদের রাখতে হবে। ইউনিয়নের সদস্য ছাড়াও হস্টেলের প্রতিটি ব্লকের একজন পড়ুয়াকে রাখতে হবে। এছাড়াও তাদের একাধিক দাবি ছিল। সেইসব দাবি নিয়ে গতকাল মধ্যরাত পর্যন্ত পড়ুয়ারা ইসি বৈঠকের বাইরে ধর্নায় বসেছিল। ইসি সদস্যদের বক্তব্য, আগেরবারও প্রায় সারারাত তাদের আটকে রাখা হয়। আন্দোলনের চোটে বৈঠক শেষ করা যায়নি। এবারও প্রায় সেই একই ঘটনা। গতকাল পিওনদেরও ভেতরে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় বলে খবর। এরপরই এক্সিকিউটি কাউন্সিলের সদস্যরা সিদ্ধান্ত নেন, এভাবে চললে বিশ্ববিদ্যালয় চালানো মুশকিল। তাই তারা পাল্টা অন্য রাস্তায় হাঁটার সিদ্ধান্ত নেন।
এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের সদস্যদের দাবি, ছাত্রদের বহু দাবি মানা সম্ভব নয়। ওইদিন বৈঠকে পর বিষয়টি তারা পড়ুয়াদের তা জানিয়ে দেন। তার পরই অরবিন্দ ভবনের গাড়ি বারান্দায় বসে পড়েন তাঁরা। কারণ রাতভর আটকে রাখার মতো বিষয় মেনে নেওয়া যায় না।
ওই অবস্থান নিয়ে কী বললেন উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ? জি ২৪ ঘণ্টাকে উপাচার্য বলেন, ইসি বৈঠক যেভাবে হওয়া উচিত সেভাবে করতে দেওয়া হচ্ছে না। এটা এক ধরনের র্যাগিং। পড়ুয়ারা কতগুলো দাবি নিয়ে এসেছিল। তাদের বক্তব্য সেইসব দাবির সমাধান এক্ষুনি করতে হবে। আমরা প্রথম তাদের ঢুকতে দিইনি। কারণ আগের বার ডেপুটেশন নিয়েই বৈঠক সাড়ে বারো ঘণ্টা হয়েছিল। গতকাল তিনটে থেকে বৈঠক শুরু হয়। তখনই ডেপুটেশনের জন্য হাজির হয় তারা। প্রথম আমরা তাদের না করি। তারপর তারা একপ্রকার জোর করেই বৈঠকে ঢোকে। এভাবে তো ইসি চালানো যায় না। ওদের বক্তব্য কেন তাদের বসিয়ে রাখা হয়েছে। এভাবে চললে ইসি বৈঠক করাই সম্ভব নয়। সদস্যদের আমি আসতে বলব কোন সাহসে? পড়ুয়াদের দাবি, স্টুডেন্ট সংক্রান্ত যেকোনও কমিটি হবে সেখানে হস্টেলের প্রতিনিধি রাখতে হবে। হস্টেলের প্রতিটি ব্লক থেকে একজন করে প্রতিনিধি রাখতে হবে। ইউনিয়নের একজন করে থাকছে। তাতেও হবে না। ১৫টি হস্টেলের প্রতিটি ব্লক থেকে একজনকে রাখতে হবে। এরপরই শিক্ষকরা বাইরে বসে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। এভাবে কাজ চালানো সম্ভব নয়। যতক্ষণ পর্য়ন্ত কোনও বিশ্বাসযোগ মহল থেকে আশ্বাস না পাই ততক্ষণ এই অবস্থান চলবে। ছাত্রদেরও আমাদের প্রতিশ্রুতি দিতে হবে কর্তৃপক্ষ যে সিদ্ধান্ত নেবে তা তারা মেনে নেবে।