‘এর চেয়ে মৃত্যু হলেই ভাল হত’! ধসে ঘরদোর হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন শিমলার প্রমীলা

এর চেয়ে মৃত্যু হলেই ভাল হত। ধসে ঘরদোর হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন শিমলার বাসিন্দা প্রমীলা। সম্প্রতি ধসের জেরে তাঁর এক কামরার বাড়িটি নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। আর সেই মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে এখন পাগলপারা অবস্থা এই মহিলার।

ইন্দিরা গান্ধী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কাছে একটি সরকারি কোয়ার্টারে ক্যানসার আক্রান্ত মাকে নিয়ে থাকতেন প্রমীলা। গত ২৩ অগস্ট প্রবল বৃষ্টি এবং তার জেরে ধসের কারণে এই কোয়ার্টার নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। তবে বরাতজোরে বেঁচে গিয়েছেন কোয়ার্টারের বাসিন্দারা। কিন্তু কেন তাঁরা বেঁচে গেলেন, তা নিয়ে আফসোস করছেন প্রমীলা। তাঁর কথায়, “এর চেয়ে মৃত্যু হলে ভাল হত। কেন বেঁচে গেলাম।”

প্রারি হাউজ় নামে ওই সরকারি কোয়ার্টারের একটিতে মাকে নিয়ে থাকতেন প্রমীলা। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে শুক্রবার তিনি বলেন, “২০১৬ সাল থেকে মায়ের ক্যানসারের চিকিৎসা চলছে। রামনগরে একটি দোকানে সেল্‌সের কাজ করতাম। গত সপ্তাহে সেই কাজও চলে গিয়েছে।” মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে এখন অস্থায়ী ঠিকানা ইন্দিরা গান্ধী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। স্থানীয় গুরুদ্বার থেকে খাবার সংগ্রহ করছেন। সেই খাবার খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন।

প্রমীলার কোনও ভাইবোন নেই। বিয়ে হয়েছিল বটে, কিন্তু স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে। তাই সংসার বলতে তিনি এবং তাঁর অসুস্থ মা। প্রমীলার কথায়, “কাজের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছি। ঝাড়ামোছার কাজ করতেও রাজি। মায়ের চিকিৎসার জন্য টাকা প্রয়োজন।” দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন প্রমীলা। তাঁরই এক প্রতিবেশী সুমন। তিনি বলেন, “চোখের সামনে সব শেষ হয়ে যেতে দেখলাম। শুধু পরনের পোশাক ছাড়া আর কিছু অবশিষ্ট নেই আমাদের। ধসে সব কেড়ে নিয়েছে।”

এর পরই অভিযোগ তোলেন, দু’দিন পেরিয়ে গেলেও প্রশাসন থেকে কোনও রকম সাহায্য পাননি। প্রমীলার মতো তিনিও গুরুদ্বার থেকে খাবার সংগ্রহ করে পেট ভরাচ্ছেন। তাঁর ছোট ছোট দুই সন্তান রয়েছে। হিমাচল প্রদেশে গত জুন থেকে বৃষ্টি, বন্যা পরিস্থিতি, ধসের তাণ্ডব চলছে। ইতিমধ্যেই রাজ্যে ২৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুধু অগস্টেই মৃত্যু হয়েছে ১২০ জনের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.