বৈঠকে যোগ না দিয়ে ভাতা পাওয়ার জন্য স্বাক্ষর করে চলে যাওয়া যাবে না। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় চলা অধিবেশনের মধ্যেই স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় এমন মন্তব্য করেন। তাঁর লক্ষ্যে ছিলেন শাসক ও বিরোধী দলের বিধায়করা। বৃহস্পতিবার ছিল বিশেষ অধিবেশনের শেষ দিন। তা শেষের আগেই স্পিকার বলেন, ‘‘অধিবেশন শেষ হল। কিন্তু আগামী দিনে বিধানসভার কাজকর্ম চলতে থাকবে। নিয়মিত কমিটির বৈঠকগুলি হবে। সেই বৈঠকগুলিতে বিধায়করা যোগ দিন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি লক্ষ্য করেছি, কেবল মাত্র ভাতা পাওয়ার জন্য বিধায়করা কমিটির বৈঠকের খাতায় সই করে চলে যান। এটা কোনও ভাবেই কাম্য নয়। বিভিন্ন কমিটির বৈঠকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে। সেগুলি নিয়ে আলোচনা করুন। কোথাও ভুল-ত্রুটি হলে তা সরকারকে জানান। এটা আপনাদের দায়িত্ব।’’
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বিভিন্ন স্ট্যান্ডিং ও অ্যাসেম্বলি কমিটি রয়েছে। মোট কমিটির সংখ্যা ৪১। রাজ্যের ২৯৪ জন বিধায়ককে দুই থেকে তিনটি কমিটিতে রাখা হয়। সেই কমিটির বৈঠকে যোগ দিলে বিধায়করা ভাতা বাবদ অর্থ পান। কিন্তু স্পিকারের অভিযোগ, বৈঠকে যোগ দিতে এলেও অনেক কেবল মাত্র হাজিরার খাতায় স্বাক্ষরকরে নিজেদের ভাতা নিশ্চিত করেন। বৈঠকেও যোগ দেন না। তা ছাড়া বিধানসভা থেকে কোনও বিধায়কদের প্রতিনিধিদল রাজ্যের কোনও প্রান্তে পরিদর্শনে গেলেও বহু বিধায়ক সেই সফর এড়িয়ে যান।
স্পিকারের এমন অভিযোগ মেনে নিয়েছেন পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যের মানুষ আমাদের বিধানসভায় পাঠিয়েছেন তাঁদের প্রতিনিধি করে। তাই বিধানসভায় এসে মানুষের স্বার্থেই কাজ করা উচিত। অধিবেশনে যেমন নিয়মিত যোগদান করা উচিত, তেমনই কমিটির বৈঠকেও যোগ দিয়ে নিজেদের দায়িত্ব পালন করা উচিত।’’ খড়দহের বিধায়কের কথায়, ‘‘বিধায়করা কেবল মাত্র ভাতা পাওয়ার জন্য বৈঠকে যোগ দিতে আসছেন, এ কথা শুনতেও তো খারাপ লাগে।’’
তবে স্পিকারের এই সমালোচনার পাল্টা বিজেপি পরিষদীয় দলের মুখ্যসচেতক মনোজ টিগ্গা বলেন, ‘‘আমরা আমাদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন। তাই কমিটির বৈঠকে কেবল স্বাক্ষর করে চলে যাওয়ার যে কথা বলা হচ্ছে, তা শাসকদলের বিধায়কদের বলা হোক।’’