বিশ্বকাপে খেলতে আসা হ্যারি কেনদের সঙ্গে রয়েছেন এক নাপিত। বিশ্বকাপের মাঝে চুল নিয়ে ইংল্যান্ডের ফুটবলাররা যাতে সমস্যায় না পড়েন, তা নিশ্চিত করতে লন্ডন থেকে উড়িয়ে আনা হয়েছে আহমেদ আলসানাভিকে। কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচের আগে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন ফ্রান্সের একাধিক ফুটবলার।
কোয়ার্টার ফাইনালে প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড। বিশ্বকাপে ভাল ছন্দে রয়েছে গ্যারেথ সাউথগেটের দল। ফ্রান্সের কাছে শনিবারের ম্যাচ নিছক বিশ্বকাপের শেষ চারে যাওয়ার লড়াই নয়। তার থেকে কিছুটা বেশিই। এই ম্যাচের সঙ্গে জড়িত সম্মান। জাত্যাভিমানের লড়াই। তাই ইংল্যান্ড শিবিরের খবর পেতে অভিনব উপায় বের করেছেন দিদিয়ের দেশঁর ফুটবলাররা। ইংল্যান্ডের ফুটবলারদের নাপিতের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন তাঁরা।
মূলত ইংল্যান্ডের ফুটবলারদের জন্য কাতারে এসেছেন এক নাপিত। সারের বাসিন্দা আহমেদ তাঁর স্ত্রী তানয়াকে নিয়ে এসেছেন কাতারে। ফিল ফডেন, মার্কাস রাশফোর্ড, জ্যাক গ্রিলিশদের চুল কাটার একাধিক ছবিও সমাজমাধ্যমে দিয়েছেন আহমেদ। ফুটবলারদের চুল কাটা ছাড়া বাকি সময় স্ত্রীকে নিয়ে কাতার ঘুরছেন তিনি। তাঁর এই ঘোরাঘুরিই কিছুটা চিন্তায় ফেলেছে ইংল্যান্ডকে। আহমেদ এর মধ্যে ঘুরে এসেছেন কিলিয়াম এমবাপেদের শিবিরেও। ফ্রান্সের কয়েক জন ফুটবলার তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন চুল কাটানোর জন্য। তাঁর মুখ থেকে কোনও গোপন তথ্য প্রতিপক্ষ শিবিরে চলে যায়নি তো? চেনা নাপিতই গুপ্তচর নয় তো! এই একটি প্রশ্নই ভাবাচ্ছে ইংল্যান্ড শিবিরকে। না তেমন কোনও সম্ভাবনা নেই। আহমেদ অত্যন্ত পেশাদার। তিনি ব্যস্ত থাকেন নিজের কাজ নিয়েই। ফুটবলারদের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক হলেও এক শিবিরের খবর কখনই অন্য শিবিরে দেন না।
আহমেদ বলেছেন, ‘‘ইংল্যান্ডের কয়েক জন ফুটবলার গত কয়েক বছর ধরে আমার কাছে চুল কাটছে। রাশফোর্ড, ফডেন, গ্রিলিশদের চুল নিয়মিত কাটি আমি। ওদের প্রয়োজন মতো বিভিন্ন জায়গা চলে যাই। ইংল্যান্ড ফুটবলারদের মতো ফ্রান্সের ফুটবলারদেরও চুল কাটছি। ঘটনা চক্রে বিশ্বকাপে দু’টো দল মুখোমুখি হয়েছে। আমি তো বেলজিয়ামের ফুটবলারদেরও চুল কেটেছি। কাতার থেকে দেশে ফেরার আগে বেলজিয়ামের অনেকেই আমার কাছে চুল কাটিয়ে গিয়েছে।’’
পেশার সুবাদে বিশ্বের প্রথম সারির একাধিক ফুটবলারের সঙ্গে আহমেদের সখ্য। গত কয়েক বছর ধরেই চুল কাটার সুবাদে ফুটবল মহলে পরিচিত তিনি। আহমেদ বলেছেন, ‘‘ম্যাচের আগের দিন ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়দের চুল সেট করে দিচ্ছি। ওদের চুলে যে স্টাইল দেখছেন, তা আমারই করে দেওয়া। ফডেনের মাথায় নতুন নকশা করেছি। গ্রিলিশের চুলে হাইলাইট করেছি। প্রতি দিন সকালে যাতে ওদের তরতাজা দেখতে লাগে, সেটা নিশ্চিত করতে চাই। অনুশীলন বা ম্যাচের সময় যাতে ওদের কোনও সমস্যা না হয় সে দিকে খেয়াল রাখি। লক্ষ লক্ষ মানুষের সামনে ওরা খেলে। ওদের ভাবমূর্তি ঠিক রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’’
এক সময় চেলসির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন আহমেদ। চেলসির ফুটবলারদের চুল কাটতেন। সেই থেকেই ধীরে ধীরে জড়িয়ে প়ড়েছেন ফুটবলের সঙ্গে। এখন তাঁর খদ্দেরের তালিকায় রয়েছেন বিশ্বের বেশ কয়েক জন প্রথম সারির খেলোয়াড়। বিশেষ করে যাঁরা ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলেন, তাঁরা অনেকেই আহমেদের কাছে যান চুল কাটানোর জন্য। চাপ সামলাতে ২০১৩ সালে তৈরি করেছেন নিজের সংস্থা। তাঁর কাছে প্রশিক্ষিত কর্মীদের নিয়ে চালাচ্ছেন সংস্থা। ফুটবলাররা অবশ্য তাঁকে ছাড়া অন্য কাউকে চুলে হাত দিতে দেন না। তাই আহমেদকেই ছুটতে হয় বিভিন্ন জায়গায়। তেমনই এসেছেন কাতারেও। গিয়েছিলেন রাশিয়াতেও।