রেলের বিরুদ্ধে টানা পাঁচ বছর আইনি লড়াইয়ের পর ‘ক্যানসেলেশন’ টিকিটের ৩৫ টাকা ফেরত পেলেন রাজস্থানের কোটার বাসিন্দা সুজিত স্বামী। আর তাঁর এই জয়ে উপকৃত হলেন আরও প্রায় তিন লক্ষ মানুষ, যাঁরা ঠিক একই অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছিলেন। সেই লাখ তিনেক মানুষকেই টাকা ফেরত দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে রেল।সুজিত পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। ২০১৭ সালের ২ জুলাই কোটা থেকে নয়াদিল্লি যাওয়ার জন্য গোল্ডেন টেম্পল মেলের টিকিট কেটেছিলেন। ঠিক তার আগের দিনই জিএসটি চালু হয়েছিল। কিন্তু কোনও কারণবশত সুজিত তাঁর টিকিট বাতিল করেন। টিকিট যখন কেটেছিলেন, তখন তাঁর কাছ থেকে ৭৬৫ টাকা নিয়েছিল রেল। কিন্তু টিকিট বাতিল করতেই ৬৫ টাকার বদলে ১০০ টাকা কেটে নিয়ে বাকি ৬৬৫ টাকা ফেরত দেয় রেল।
জিএসটি চালু হওয়ার পরেও তাঁর কাছ থেকে অতিরিক্ত ৩৫ টাকা পরিষেবা কর হিসেবে কেন নেওয়া হল, তা নিয়ে রেলের কাছে জবাব চেয়েছিলেন সুজিত। রেলের ধার্য করা সেই অতিরিক্ত ৩৫ টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য সেই থেকে লড়াই শুরু সুজিতের। তিনি বিষয়টি জানিয়ে তথ্যের অধিকার আইনে (আরটিআই) মামলা করেন।
আরটিআই-এর উত্তরে রেল যুক্তি দেয়, রেল মন্ত্রকের ৪৩ নম্বর কমার্শিয়াল সার্কুলার অনুযায়ী ওই ব্যক্তি জিএসটি চালুর আগে টিকিট কেটেছিলেন এবং বাতিল করেন জিএসটি চালু হওয়ার পর। যেহেতু জিএসটি চালুর আগে টিকিট কাটা হয়েছিল, সেই সময় যে পরিষেবা কর নেওয়া হয়েছে, তা ফেরতযোগ্য নয়।
সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে সুজিত বলেন, “টাকা ফেরতের জন্য প্রধানমন্ত্রী, রেলমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর, জিএসটি কাউন্সিল এবং অর্থমন্ত্রীকে লাগাতার টুইট করে গিয়েছি। আর টাকা ফেরতের জন্য এই টুইট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে।”
২০১৯-এর ১ মে সুজিতের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৩৩ টাকা ফেরত দেয় রেল। তবে ২ টাকা কেটে নিয়েছিল। সুজিত কিন্তু সেই ২টাকা ফেরতের জন্যও লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন। শেষমেশ গত সপ্তাহে সেই দু’টাকাও সুজিতকে ফেরত দেয় রেল।
৩৫ টাকা আদায়ে লড়াই শুরু করেছিলেন সুজিত। কিন্তু তাঁর এই দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ে উপকৃত হলেন ২ লক্ষ ৯৮ হাজার মানুষ। আইআরসিটিসি-র এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, ওই ২ লক্ষ ৯৮ হাজার মানুষকে তাঁদের প্রাপ্য টাকা ফেরত দেবে রেল। এর জন্য খরচ হবে ২ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকা।