আইপিএলের ম্যাচ দেখানোর লড়াই থেকে হঠাৎই সরে দাঁড়াতে চলেছে অ্যামাজন। সংস্থার তরফে জানা গিয়েছে, বিপুল অর্থের এই লড়াইয়ে তারা হয়তো যোগ দেবে না। ফলে আগামী দিনে অ্যামাজনে আইপিএলের ম্যাচ দেখার সুযোগ সম্ভবত থাকছে না। আইপিএলের সম্প্রচার স্বত্ব কেনার দৌড়ে এ বার মুকেশ অম্বানীর রিলায়েন্স এবং ওয়াল্ট ডিজনির লড়াই দেখা যেতে পারে। অ্যামাজন সরে দাঁড়ানোর রিলায়েন্সের সঙ্গে তাঁদের ‘যুদ্ধ’ দেখার সুযোগ থাকল না।
আগামী ১২ জুন আইপিএলের মিডিয়া স্বত্বের জন্য ই-নিলাম হবে। প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকার বিড উঠতে পারে। অনেক দিন আগে থেকেই জেফ বেজোসের অ্যামাজনের সঙ্গে অম্বানীর রিলায়েন্সের টক্কর নিয়ে জোর চর্চা চলছিল। টিভিতে সম্প্রচার, ডিজিটালে সম্প্রচার, ভারত এবং বিদেশে নির্দিষ্ট কিছু ম্যাচের সম্প্রচার-সহ অনেকগুলির বিষয়ে এ বার নিলাম হবে। অনলাইন স্ট্রিমে ভারতের বিপুল বাজার ধরতে অ্যামাজন স্বত্ব কিনতে আগ্রহী ছিল। তবে শেষ মুহূর্তে তাদের প্রত্যাহারে অবাক অনেকেই। অ্যামাজনের তরফে বেসরকারি ভাবে বলা হয়েছে, ভারতে ইতিমধ্যেই তারা প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ফেলেছে। শুধুমাত্র অনলাইনের জন্য আবার বিনিয়োগ করা ব্যবসায়িক স্বার্থের পক্ষে ভাল হবে না বলে তাদের ধারণা।
অ্যামাজন সরে যাওয়ায় রিলায়েন্স, ডিজনি এবং সোনি গ্রুপ রয়েছে লড়াইয়ে। আগামী দিনে ভারতে অনলাইনের বাজার তুঙ্গে পৌঁছনোর আশা রয়েছে। ফলে সে রকম জায়গায় বিনিয়োগ করলে লাভবান হওয়ার ব্যাপারে কেউ সন্দেহ প্রকাশ করছেন না। অ্যামাজনও সেই ভাবনায় বিশ্বাসী। গোটা বিশ্বে প্রায় ছ’টি প্রথম সারির লিগকে চিহ্নিত করেছে অ্যামাজন। সেই তালিকায় আইপিএল-ও ছিল। সম্প্রতি ইউরোপের ফুটবলে বিপুল বিনিয়োগ করেছে তারা। আমেরিকায় ‘থার্সডে নাইট ফুটবল’-এর সম্প্রচার স্বত্বও পেয়েছে তারা। দর্শকসংখ্যার বিচারে ইংল্যান্ডের ঘরোয়া ফুটবল এবং আমেরিকার জাতীয় ফুটবল লিগের পরেই আইপিএল। ফলে এ রকম একটা প্রতিযোগিতার স্বত্ব কেনার লড়াই থেকে অ্যামাজন পিছিয়ে আসবে, এটা অনেকেই বিশ্বাস করতে পারছেন না।
অ্যামাজন পিছিয়ে আসায় রিলায়েন্স বাকিদের থেকে লড়াইয়ে অনেকটা এগিয়ে গেল বলে মনে করা হচ্ছে। এই স্বত্ব পাওয়ার জন্য গত বছর থেকেই অভিজ্ঞ লোকদের নিয়োগ করছে রিলায়েন্স। রয়েছেন মুকেশের ছেলে আকাশ অম্বানীও। অম্বানীর যাঁকে সবচেয়ে ভরসা করেন, সেই মনোজ মোদীও এর মধ্যে জড়িয়ে। ডিজনি আরও এক ধাপ এগিয়ে ক্যালিফোর্নিয়ার সদর দপ্তর থেকে অভিজ্ঞ কর্মীদের মুম্বইয়ে উড়িয়ে আনছে। একটি ব্যাপার তাদের এগিয়ে রাখছে। তা হল, ভারতের মাটিতে তাদের জনপ্রিয়তা। ভারতে নেটফ্লিক্সের জনপ্রিয়তা যেখানে কমছে, সেখানে ডিজনি প্লাস হটস্টারের জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে।
সম্প্রতি ফিউচার গ্রুপের মালিকানা নিয়ে আইনি যুদ্ধে নেমেছিল অ্যামাজন এবং রিলায়েন্স। কেউই সফল হয়নি। আইপিএলে নিয়ে ফের দু’জনের যুদ্ধ লাগার আশঙ্কা ছিল। তা হয়তো দেখা যাবে না।