উত্তাল সমুদ্রে রোমাঞ্চের নেশা, দিঘায় প্রাণ গেল কামারহাটির বাসিন্দার! দু’দিনে মৃত্যু দুই পর্যটকের

বর্ষার মরসুমে উত্তাল দিঘার সমুদ্র। বিপজ্জনক ঢেউয়ের মধ্যে ক্ষণিকের মনোরঞ্জন করতে গিয়েই প্রাণ হারালেন এক পর্যটক। উত্তাল ঢেউয়ে গার্ডওয়ালে ধাক্কা খেয়ে গুরুতর জখম হন সোদপুর থেকে আসা ওই পর্যটক। নুলিয়ারা তাঁকে উদ্ধার করে দিঘা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। সোমবার রোমাঞ্চের নেশায় গার্ডওয়াল টপকে যাওয়াই ‘কাল’ হল ওই পর্যটকের বলে জানিয়েছেন নুলিয়ারা। ২৪ ঘণ্টা আগেই দিঘায় উত্তাল সমুদ্রে স্নানে করতে নেমে এক পর্যটক প্রাণ হারিয়েছেন। পর পর দু’দিনে দুটি মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্য সমুদ্রসৈকতে।

পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার সমুদ্রস্নানে নেমে মৃত্যু হয় উত্তর ২৪ পরগনার টিটাগড়ের বাসিন্দা দীপঙ্কর নন্দীর। ২৮ বছরের ওই যুবকের প্রাণহানির পর সোমবার উত্তর ২৪ পরগনা থেকে আসা আরও এক পর্যটক প্রাণ হারিয়েছেন। আকাশ সাহা নামে ৩০ বছরের ওই যুবক পরিবারের সঙ্গে দিঘা বেড়াতে এসেছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার কামারহাটি এলাকা থেকে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, কামারহাটির বাসিন্দা আকাশ হোটেলের ঘরে খানিক বিশ্রাম নিয়েই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সমুদ্রস্নানে গিয়েছিলেন। নিউ দিঘার হলিডে হোম ঘাটের কাছে গার্ডওয়াল টপকে সৈকতে বাঁধানো ধাপে বসেছিলেন তাঁরা। সেই সময় একের পর এক উত্তাল ঢেউ এসে আছড়ে পড়ছিল সমুদ্রতটে। আচমকাই একটি বিশালাকায় ঢেউ আছড়ে পড়ে আকাশের উপর। ঢেউয়ের ধাক্কায় ছিটকে পড়েন ওই যুবক। পাশের কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই জলের তোড়ে ভেসে যেতে থাকেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে কর্তব্যরত নুলিয়ারা ছুটে গিয়েছিলেন। কোনও ক্রমে আকাশকে তাঁরা উদ্ধারও করেন। কিন্তু, পরে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

এর আগে রবিবার নিউ দিঘার সি-হক গোলাঘাটের কাছে একই ভাবে উত্তাল সমুদ্রে স্নানে নেমেছিলেন টিটাগড়ের বাসিন্দা দীপঙ্কর। অন্যেরা অপেক্ষাকৃত সুরক্ষিত জায়গায় থাকলেও দীপঙ্কর বেশ খানিকটা নীচের দিকে নেমে যান বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি। সেই সময় ঢেউয়ের দাপটে জলের তোড়ে ভেসে যান ওই যুবক। নুলিয়ারা সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধারকাজে ঝাঁপালেও দীপঙ্করকে বাঁচানো যায়নি। প্রশাসনের মতে, শুধুমাত্র সচেতনতার অভাবে রোমাঞ্চের নেশায় উত্তাল সমুদ্রে নেমে একের পর এক পর্যটকের এই পরিণতি মর্মান্তিক এবং যথেষ্ট উদ্বেগের। সচেতনতামূলক প্রচার থেকে শুরু করে পুলিশি পাহারাও চলছে। তার মধ্যেও এমন ঘটনা ঘটল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.