সেই নস্ট্যালজিক গান মনে ধরেছিল। ‘দো ঘুট মুঝে ভি পিলা দে শরাবি দেখ ফির হোতা হ্যায় কিয়া’— আর তারপর নিশুতি রাতে মদ্যপান করে নাক ডাকতে শুরু করেছিলেন তিনি। কাজের চাপ তেমন নেই ধরে নিয়েই দু’পাত্র গলায় ঢেলেছিলেন। হ্যাঁ, তিনি স্টেশন মাস্টার অনিরুদ্ধ কুমার। যিনি এই কাজের জন্য সাসপেন্ড হয়েছেন। এমনকী অপরাধ যদি প্রমাণিত হয় তাহলে সহকারী স্টেশন মাস্টারের চাকরিও খোয়াতে হতে পারে। তাঁর এই মদ্যপান করে নাক ডেকে ঘুমানোর জেরে প্রায় দেড় ঘণ্টা দিল্লি–হাওড়া রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল বলে অভিযোগ।
জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের কঞ্চৌসী স্টেশনে। গত বুধবার রাত ১২টার পর থেকে প্রায় দেড়টা পর্যন্ত দিল্লি–হাওড়া রুটের সমস্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। সিগন্যাল সবুজ দেখতে না পেয়ে বিভিন্ন স্টেশনে দাঁড়িয়ে পড়ে বৈশালী এক্সপ্রেস, সঙ্গম এক্সপ্রেস, ফরাক্কা এবং মগধ এক্সপ্রেসের মতো ট্রেন। তখন কঞ্চৌসী স্টেশনের দায়িত্বে ছিলেন অনিরুদ্ধ। ওই স্টেশন দিয়েই ট্রেনগুলির যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কোথায় অনিরুদ্ধ? তিনি তো তখন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন গানের মধ্যে দিয়ে—দেখ ফির হোতা হ্যায় কিয়া। যার জন্য বারবার ফোন করেও তাঁর ঘুম ভাঙানো যায়নি।
আর রেল সূত্রে খবর, বহুক্ষণ স্টেশনে ট্রেন দাঁড়িয়ে ছিল। তখন কন্ট্রোল রুমে খবর দেওয়া হয়। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝতে পেরে স্টেশনে ছুটে আসেন রেলের উচ্চপদস্থ কর্তারা। আর স্টেশনে এসে চোখ কপালে উঠে রেলকর্তাদের। অনিরুদ্ধের কেবিনে ঢুকে কী দেখলেন তাঁরা? কঞ্চৌসী স্টেশনটি অউরৈয়া জেলার মধ্যে পড়ে। সেখানকার স্টেশন মাস্টার বিশ্বম্ভর দয়াল এই বিষয়ে জানান, কেবিনে ঢুকে দেখা যায় নাক ডেকে ঘুমোচ্ছেন অনিরুদ্ধ। তারপর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হতে ২টো বেজে যায়।
ইতিমধ্যেই অনিরুদ্ধ মদ্যপান করেছিলেন বলে অভিযোগ জমা পড়েছে রেল কর্তৃপক্ষের কাছে। অনিরুদ্ধের বিরুদ্ধে চার্জশিট তৈরি হয়েছে। সাসপেন্ড করা হয়েছে তাঁকে। তদন্ত শুরু হয়েছে। মেডিক্যাল পরীক্ষা হয়েছে অনিরুদ্ধের। যদি পরীক্ষায় উঠে আসে, ঘটনার সময় তিনি মদ্যপ অবস্থায় ঘুমোচ্ছিলেন তাহলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।