বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে শেলফিশের মধ্যে কয়েক শতাব্দী ধরে ক্যানসার ছড়িয়ে পড়ার প্রবণতা রয়েছে। সম্প্রতি এই গবেষণাকে কাজে লাগিয়ে ক্যানসার চিকিৎসায় নতুন দিক খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
পিয়ার-রিভিউ জার্নাল নেচারে সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, কী ভাবে এই শতাব্দীপ্রাচীন ক্যানসারের কোষগুলি নীরবে শামুকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। লন্ডনের ওয়েলকাম স্যাঞ্জার ইনস্টিটিউট এবং স্পেনের ইউনিভার্সিটি দে সান্তিয়াগো দে কম্পোসটেলার গবেষকরা ডিএনএ সিকোয়েন্সিং ব্যবহার করে এই গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন। বিজ্ঞানীদের ধারণা, শেলফিশের মধ্যে যে ছোঁয়াচে ক্যানসারের হদিস মিলেছিল, সেই ক্যানসারই শামুকদের মধ্যেও দেখা গিয়েছে।
শামুকের শরীরে সংক্রামক ক্যানসার বাইভালভ ট্রান্সমিসিবল নিউওপ্লাসিয়া (বিটিএন) নামে পরিচিত। ক্যানসারের কোষগুলি সামুদ্রিক জলের মাধ্যমে একটি শামুক থেকে অন্য শামুকের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। একটি ক্যানসার কোষ থেকে একাধিক প্রতিলিপি তৈরি হয়, ফলে সারা শরীরে ক্যানসার ছড়িয়ে পরে।
এই ধরনের ক্যানসার কোষের হদিস মিলেছে তাসমানিয়ান ডেভিলস প্রজাতির প্রাণী (একে অপরকে কামড়ানোর সময় এই ক্যানসার ছড়িয়ে পড়ে), কুকুর (সঙ্গমের সময় এই ক্যানসার ছড়িয়ে পড়ে), মানুষের (খুব অল্প সংখ্যক অন্তঃসত্ত্বার শরীর থেকে তাঁদের শিশুদের শরীরে এই ক্যানসার ছড়িয়ে পড়ে) শরীরে।
স্পেন, পর্তুগাল, যুক্তরাজ্য, আয়ারল্যান্ড এবং মরক্কো-সহ ১১টি দেশের প্রায় ৩৬টি স্থান থেকে প্রায় ৭০০০ টি শামুক সংগ্রহ করে এই গবেষণাটি করে বৈজ্ঞানিক দল দু’টি ভিন্ন ধরনের বিটিএন খুঁজে পেতে সক্ষম হয়েছে। বিজ্ঞানীদের অনুমান, এ রকম ছোঁয়াচে ক্যানসারের আরও অনেক ধরন রয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলেন, ‘‘বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণযোগ্য ক্যানসার সম্পর্কে একটি বিস্তৃত দৃষ্টিভঙ্গি থাকলে টিউমারগুলির বিকাশ এবং রোগীর আয়ুবৃদ্ধি করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে চিকিৎসকেদের সুবিধাই হবে।’’ বিজ্ঞানীদের দাবি, তাঁদের এই গবেষণা মানুষের ক্যানসার চিকিৎসার ক্ষেত্রে নতুন পথ দেখাবে।