বিশ্বকাপ থেকে ছুটি ভারতের, হরমনদের ‘সমর্থন’ পেয়েও জিততে পারল না পাকিস্তান, সেমিতে নিউ জ়িল‍্যান্ড

রবিবার অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারার পরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে টিকে থাকার জন্য পাকিস্তানের উপরেই নির্ভর করছিল ভারতের ভাগ্য। ক্রিকেটারেরা মুখে না বললেও সোমবার মনে মনে হয়তো পড়শি দেশকেই ‘সমর্থন’ করছিলেন। সে ‘সমর্থন’ কাজে লাগল না। নিউ জ়‌িল্যান্ডের কাছে হেরে গেল পাকিস্তান। শেষ চারে গেল কিউয়িরাই। বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেল হরমনপ্রীত কউরের ভারত। আগে ব্যাট করে নিউ জ়িল্যান্ডের তোলা ১১০/৬ রানের জবাবে পাকিস্তান শেষ ৫৬ রানে।

নিউ জ়‌িল্যান্ডকে কম রানে আটকে রাখার পিছনে পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রিত বোলিং কাজে লেগেছে। তবে ততটাই খারাপ তাদের ফিল্ডিং। গোটা ম্যাচে পাঁচটি সহজ ক্যাচ ছেড়েছেন ফিল্ডারেরা। সেগুলি ধরতে পারলে অনেক কম রানে আটকে রাখা যেত কিউয়িদের। খারাপ ফিল্ডিংয়ের খেসারত দিতে হল তাদের। কম রানের লক্ষ্যমাত্রা থাকায় আগ্রাসী ব্যাটিং করেছে তারা। তাতেও লাভ হয়নি।

টসে জিতে নিউ জ়িল্যান্ড আগে ব্যাটিং নেওয়ায় শুরুতেই চাপে পড়েছিল পাকিস্তান। কারণ রান রেট ভাল রাখতে গেলে আগে ব্যাট করে বেশি রানে জিতলে সুবিধা। দ্বিতীয় বলে চার মেরে কিউয়িদের শুরুটা ভালই করেছিলেন সুজি বেটস।

প্রথম পাঁচ ওভারে নিউ জ়িল্যান্ডের রানের গতি খারাপ ছিল না। বিনা উইকেটে ৩৪ রান তুলে দিয়েছিল তারা। সুজি বেটসের ক্যাচ ছাড়েন নাশরা সান্ধু। পরের ওভারে ওপেনার প্লিমারকে আউট করেন তিনিই। অষ্টম ওভারে ওমাইমা ক্যাচ ছাড়েন অ্যামেলিয়া কেরের। রান তুলছিলেন বেটস। তাঁকেও ফিরিয়ে দেন সান্ধু।

তবে নিউ জ়‌িল্যান্ডের রানের গতি অনেকটাই কমে গিয়েছিল তখন। পিচ মন্থর থাকায় ব্যাটে-বলে সংযোগে সমস্যা হচ্ছিল। ফলে চালিয়ে খেলতে পারছিলেন না নিউ জ়িল্যান্ডের ব্যাটারেরা। খারাপ ফিল্ডিং করলেও পাকিস্তানের বোলারেরা নিয়ন্ত্রিত বোলিং করছিলেন। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে শেষ পর্যন্ত ছয় উইকেট হারিয়ে ১১০ রান তোলে নিউ জ়িল্যান্ড।

ম্যাচ শুরু হওয়ার আগেই পাকিস্তানের অধিনায়ক ফতিমা সানা জানিয়েছিলেন, রান রেটের কথা মাথায় রেখেই খেলবেন তাঁরা। নিউ জ়িল্যান্ডের ইনিংস শেষ হওয়ার পর দেখা যায়, ১০.৪ ওভারের মধ্যে রান তুলে দিলে ভারত, নিউ জ়‌িল্যান্ডকে টপকে শেষ চারে যাবে পাকিস্তান। ১০.৪ ওভারের পরে রান তুললে ভারত সেমিফাইনালে যাবে। পাকিস্তান হেরে গেলে নিউ জ়িল্যান্ড সেমিফাইনালে যাবে।

ফতিমার কথাই সত্যি হয়। প্রথম বল থেকে চালিয়ে খেলতে থাকে পাকিস্তান। প্রথম ওভারে সাত রান ওঠে। দ্বিতীয় ওভারেই ফেরেন আলিয়া রিয়াজ়। তৃতীয় ওভারে মুনিবা আলি ফেরেন। চতুর্থ ওভারে বল করতে আসেন ইডেন কারসন। তাঁর ছ’টি বলে একটিও রান নিতে পারেননি ইরম জাভেদ। আরও চাপে পড়ে পাকিস্তান। পঞ্চম ওভারে ২৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে তারা। ষষ্ঠ ওভারে সিদরা আমিন ফিরে যাওয়ার পরেই আগ্রাসী খেলা থেকে সরে আসে পাকিস্তান।

পরের তিনটি ওভারে কোনও উইকেট পড়েনি। মাত্র ২০ রান ওঠে। বোঝাই যাচ্ছিল পাকিস্তান কোনও মতেই ১০.৪ ওভারের মধ্যে রান তুলতে পারবে না। সেটাই হয়। উল্টে ১০.৪ ওভার হওয়ার আগেই আরও দু’টি উইকেট হারায় তারা। ফিরে যান নিদা দার (৯) এবং ওমাইমা (২)। ১২তম ওভারে তিনটি উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের জয়ের আশা এবং ভারতের সেমিফাইনালের স্বপ্ন শেষ করে দেন অ্যামেলিয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.