পাকিস্তানের বোলারদের দেখলেই নাকি কেঁপে যান ভারতীয় ব্যাটারেরা। রবিবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নামার কয়েক ঘণ্টা আগে এই কথা স্বীকার করে নিলেন শুভমন গিল। রবিবার রোহিত শর্মার সঙ্গে তিনিই ওপেন করবেন। প্রশ্ন উঠছে, শুভমনের এই স্বীকারোক্তি কি ভারতীয় দলের মনোবলের ভিত নড়িয়ে দেবে না?
শুভমন যে খুব ভুল বলেছেন, তা নয়। তিনি যা বলেছেন, এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বের ম্যাচে সেটাই দেখা গিয়েছে। রবিবারের ম্যাচেও কি এর পুনরাবৃত্তি হবে? কেন এরকম বলেছেন, শুভমন তার কারণও ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁর বক্তব্য, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কম খেলার কারণেই শাহিন আফ্রিদি, হ্যারিস রউফদের সামলাতে সমস্যা হচ্ছে তাঁদের।
শুভমনের যুক্তি, এশিয়া কাপ বা বিশ্বকাপ বাদে আর কোথাও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলে না ভারত। ভারত-পাকিস্তান কোনও দ্বিপাক্ষিক সিরিজ় হয় না। ফলে পাকিস্তানের বোলারদের চেনার সুযোগটাই থাকে না। আন্তর্জাতিক মঞ্চে সেটাই সমস্যায় ফেলে বলে দাবি শুভমনের। তিনি নিজেও গ্রুপের ম্যাচে ৩২ বলে মাত্র ১০ রান করেছেন। টপ অর্ডারের বাকিদেরও নড়বড়ে দেখিয়েছে।
শুভমন বলেন, “বাকি দলগুলোর মতো আমরা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খুব বেশি খেলি না। তবে এটা জানি ওদের বোলিং আক্রমণ কতটা ভাল। নিয়মিত না খেললে বড় মঞ্চে গিয়ে ওদের খেলতে অসুবিধা হয়ে যায়।”
পাকিস্তানের বোলাররা কেন বাকিদের থেকে আলাদা, সেটা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে শুভমন বলেছেন, “জোরে বোলার হিসাবে ওরা বেশ আলাদা। নিজস্ব দক্ষতা রয়েছে প্রত্যেকের। শাহিন বল দারুণ সুইং করাতে পারে। নাসিমের অস্ত্র হল গতি। পিচ থেকে ফায়দা তোলার চেষ্টা করে। বিভিন্ন পরিস্থিতিতে ওদের বোলিংও বদলে যায়।”
তবে নিজেদের হাতেও অস্ত্র রয়েছে সেটাও জানিয়ে রেখেছেন শুভমন। বাঁ হাতি থ্রোডাউন বিশেষজ্ঞ নুয়ান সেনাবীরত্নে রয়েছেন ভারতের দলে। তাঁর বিরুদ্ধে অনুশীলন করেই শুভমনেরা তৈরি হচ্ছেন। শুভমন বলেছেন, “অনুশীলন খুবই সাহায্য করেছে। গত ৭-৮ বছর ধরে আমাদের দলের সঙ্গে ঘুরছে নুয়ান। থ্রোডাউনে অনেক বৈচিত্র রয়েছে। ডান হাতি থ্রোডাউন বিশেষজ্ঞ রঘু রয়েছে। সাইড আর্ম বিশেষজ্ঞ (দয়ানন্দ গরানি) রয়েছে। এদের বিরুদ্ধে অনুশীলন করলে যে কোনও পরিস্থিতিতে খেলতে সুবিধা হয়।”
কী ভাবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সফল হওয়া যাবে, তার উপায়ও বাতলে দিয়েছেন শুভমন। তাঁর মতে, ওপেনারেরা যদি শুরুটা ভাল করতে পারেন এবং বিপক্ষের বোলারদের শাসন করতে পারেন তা হলে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। রোহিতের সঙ্গে তাঁর জুটি গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে বলে মনে করেন তিনি।
শুভমন বলেছেন, “রোহিত এমন একজন ব্যাটার যে বোলারদের বিরুদ্ধে কোনাকুনি শট মারার চেষ্টা করে। আমি মাটিতে রেখে শট খেলি। এই জুটি তাই জন্যেই সফল হয়। যে হেতু আমাদের খেলার কৌশল এবং শট মারার ধরন আলাদা, তাই বিপক্ষকে চাপে ফেলা যায়।”
গ্রুপ পর্বে সিনিয়র পর্যায়ে প্রথম বার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছিলেন শুভমন। সেই ম্যাচে যে চাপ ছিল এটা মেনে নিয়েছেন তিনি। বলেছেন, “বাকি ম্যাচগুলোর থেকে একটা আলাদা চাপ ছিল। কিন্তু চাপ সব ম্যাচেই থাকে। এটা নিয়ে ভাবি না। আফগানিস্তান বা নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে খেলতে নামলেও পারফর্ম করার চাপ থাকে। স্নায়ু ধরে রাখতে হয়।”