করোনা মহামারী ভারতকে খুব শিক্ষা দিয়েছে। তাই পরের মহামারীর সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য এখন থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত। ইতিমধ্যেই রেলওয়ে কোচকে আইসোলেশন সেন্টারে পরিণত করে বিশ্বকে পথ দেখিয়েছে দেশ। এবার ভারত সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিপিং কন্টেনারের ভিতর তৈরি হবে দুটি মোবাইল হসপিটাল। যাতে প্রয়োজন পড়লে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া যেতে পারে এই মোবাইল হসপিটালকে।
এই দুটি মোবাইল হসপিটালের খরচ বহন করবে প্রধানমন্ত্রী আত্মনির্ভর স্বচ্ছ্ব ভারত যোজনা। এই দুটি হসপিটাল নয়াদিল্লি ও চেন্নাইতে রাখা হবে। প্রতিটি হসপিটালে থাকবে ৩০টি কনটেনার। এগুলি সাধারণত জিনিসপত্র এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যেতে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে এগুলি চিকিৎসার সরঞ্জাম, চিকিৎসক ও প্য়ারামেডিক্যাল স্টাফদের কাজে লাগবে। সিদ্ধান্ত হয়েছে এগুলি সইসব জায়গায় রাখা হবে যেখান থেকে ভারতের যে কোন জায়গায় দ্রুত যাওয়া সম্ভব।
স্বাস্থ্য দপ্তরের এক অধিকর্তা জানিয়েছেন, “এই হাসপাতালগুলির খরচ জোগাবে প্রধানমন্ত্রী আত্মনির্ভর ফান্ড। রাজ্যকে এর জন্য কিছুই খরচ করতে হবে না। এগুলি সংগ্রহ ও নিয়োগের কাজও করবে কেন্দ্র। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এগুলি তৈরি করে সঠিক জায়গায় রাখার চেষ্টা শুরু হয়েছে।”
১৫তম ফিনান্স কমিশনের রিপোর্ট অনুসারে ভারতে ১৮ লক্ষ ৯৯ হাজার ২২৮টি হসপিটাল বেড রয়েছে। এর মধ্যে ৬০ শতাংশেরও বেশি প্রাইভেট সেক্টরের। পরিসংখ্যান বলছে প্রতি ১ হাজার মানুষ পিছু ১.৪টি করে বেড রয়েছে ভারতে। ফিনান্স কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী, অন্যান্য দেশের তুলনায় এই সংখ্যা খুব কম। চিনে প্রতি ১০০০ জন পিছু ৪টি করে বেড রয়েছে। শ্রীলঙ্কা, আমেরিকা ও ব্রিটেনে এর সংখ্যা ৩টি। থাইল্যান্ড, ব্রাজিলে ১০০০ জনের জন্য ২টি করে বেড রয়েছে। ভারতে বিহার, ওড়িশা, ছত্তিশগড়, জম্মু ও কাশ্মীর, ঝাড়খণ্ড, মণিপুর, মধ্যপ্রদেশ, অসমে বেডের সংখ্যা খুব কম। গুজরাট, উত্তর প্রদেশ, মহারাষ্ট্র, অন্ধ্র প্রদেশ, হরিয়ানা ও তেলাঙ্গানায় সরকারি হাসপাতালে বেড কম থাকলেও বেসরকারি হাসপাতালে বেড রয়েছে।
করোনা মহামারী যেভাবে ভারতকে তছনছ করেছে, তা দেখার পরই তাই মোবাইল হাসপাতালের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে গ্রামের দিকে হাসপাতাল কম। সেখানে যাতে প্রয়োজনে চিকিৎসা পৌঁছনো যায়, তাই এই বন্দোবস্ত।