শেখ হাসিনা যখন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তখন পুজোর ‘উপহার’ হিসেবে আসত পদ্মার ইলিশ। কিন্তু এবার ইউনুস সরকারের সেই ট্র্য়াডিশন ভেঙে জানিয়ে দিয়েছে যে, এবার আর বাংলায় ইলিশ পাঠনো হবে না। কিছুদিন আগে পদ্মাপারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রকের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার জানিয়ে দিয়েছেন যে, চলতি বছর দুর্গাপুজোয় (Durga Puja 2024) ভারতে ইলিশ পাঠানো হচ্ছে না। এই মর্মে বাণিজ্য মন্ত্রককে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। ইলিশ বন্ধ, তো? ভারত থেকে এবার আড়াই লাখ ডিম পাতে পড়ছে বাংলাদেশের!
বাংলাদেশের বাজারে মূল্যবৃদ্ধি রোধে ভারত থেকে আমদানি করা হয়েছে ২ লক্ষ ৩১ হাজার ৪০ পিস ডিম। ডিমপ্রতি সাত থেকে সাড়ে সাত টাকা আমদানির খরচ হয়েছে। সোমবার বিকেল পর্যন্ত বেনাপোল কাস্টমসের চেকপোস্ট কার্গো শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বেনাপোল কাস্টমস সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলাদেশি মুদ্রায় ভারত থেকে যাওয়া প্রতিটি ডিমের দাম দাঁড়াচ্ছে প্রায় ৫ টাকা। এছাড়া প্রতি ডজন ডিমের নির্ধারিত মূল্যের উপর ৩৩ শতাংশ কাস্টমস ডিউটি বাবদ ১ টাকা ৬৬ পয়সা যোগ হবে। সবমিলিয়ে প্রতিটি ডিমের আমদানি মূল্য দাঁড়াচ্ছে ৭ থেকে ৭.৫০ টাকার মতো।
ঢাকার হাইড্রো ল্যান্ড সলিউশান নামের এক প্রতিষ্ঠান এই ডিম আমদানি করেছে। ভারতের শ্রী লক্ষ্মী এন্টারপ্রাইজ থেকে এই ডিম গিয়েছে। কাস্টমসের ছাড়পত্র পাওয়ার অপেক্ষা ট্রাকভর্তি ডিম। সবুজ সংকেত পেলেই ডিম ঢুকে যাবে বাজারে। বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট রাতুল এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আব্দুল লতিফ এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন যে, বাংলাদেশের ডিমের বাজারের যে অস্থিরতা চলছে তা দূর করার জন্য় আরও ডিম আমদানির প্রয়োজন ভারত থেকে। তাহলে সেই দেশের মানুষ কম দামে ডিম কিনতে পারবেন। ঘটনাচক্রে ভারত থেকে পাঠানো ডিমের উপর বাংলাদেশকে অন্ধের মতোই ভরসা করতে হবে গুণমানের বিষয়ে। কারণ বেনাপোলের প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের কর্মকর্তা ডা.বিনয় কৃষ্ণ মণ্ডল জানিয়েছেন, তাঁদের ডিম পরীক্ষার কোনও যন্ত্রপাতিই নেই। ভারতের চুক্তির উপর ভিত্তি করে ডিমের ছাড়পত্র দেওয়া হবে। খালি চোখে কোনও সমস্য়া দেখা দিলে তা খতিয়ে দেখা হবে।
ভারতে ইলিশ না পাঠানোর সিদ্ধান্তে রীতিমতো ব্য়াকফুটেই চলে গিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশে ইলিশ এখন সাধারণের নাগালের বাইরে। ব্যবসায়ীদের দাবি, সাগরে ইলিশ কম পাওয়া যাচ্ছে। তাই সরবরাহও কম। ইলিশ উৎপাদনে বিশ্বের ১১ দেশের মধ্যে শীর্ষে বাংলাদেশ। বিশ্বের ৮৬ ভাগ ইলিশই ধরা পড়ে এখানে। সরকার রফতানি বন্ধ রেখেছে। তবে বাজারে ইলিশ আগুন! ঢাকায় কেজি প্রতি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৬০০ থেকে ১৮০০ টাকা দামে। ৭০০-৮০০ গ্রামের দাম ১৪০০ থেকে ১৬০০ টাকা। এই দামে ইলিশ কেনা প্রায় অসম্ভব। বিক্রেতাদের দাবি,এবার ইলিশ ধরা পড়ছে খুব কম। সেদেশে ইলিশের যোগান আসে মূলত চাঁদপুর, ভোলাসহ দক্ষিণাঞ্চল থেকে। মাছ ব্যবসায়ীরা দাবি উজান থেকে বন্যার জল আসায় ইলিশ কম পাওয়া যাচ্ছে।