কৃতকর্মের ফল পেলেন কলকাতার প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে বন্দি ১০ আবাসিক। সোমবার দেশের ৭৬তম স্বাধীনতা দিবসে মুক্তি দেওয়া হল তাঁদের। সংশোধনাগার সূত্রের খবর, মুক্তিপ্রাপ্ত আবাসিকদের অধিকাংশই খুন এবং ডাকাতির আসামি হিসেবে সংশোধনাগারে ছিলেন। কিন্তু তাঁদের আচার-ব্যবহার ভাল হওয়ায় মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই তাঁদের মুক্তি দেওয়া হল।
রাজ্য কারা দফতরের এক আধিকারিকের বক্তব্য, সংশোধনাগারের কাজ বন্দিদের মনোবৃত্তির ‘সংশোধন’ করা। সংশোধনাগারে থাকাকালীন ওই মুক্তিপ্রাপ্ত আবাসিকদের মধ্যে মানসিক বদল এসেছে। পরিবর্তন এসেছে তাঁদের আচার-ব্যবহারে। সে কারণেই মেয়াদ ফুরনোর আগেই তাঁদের মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মুক্তিপ্রাপ্ত আবাসিকদের মধ্যে কারও বন্দিদশার মেয়াদ বাকি ছিল তিন মাস, কারও ১১ মাস আবার কারও এক বছর।
প্রসঙ্গত, স্বাধীনতা দিবসে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার-সহ রাজ্যের ১৫টি সংশোধনাগার থেকে মোট ৯৯ জন আবাসিককে মুক্তি দেওয়া হয়েছে তাঁদের বন্দিদশার মেয়াদ ফুরনোর আগে। তালিকায় আছেন এক জন বাংলাদেশি মহিলাও। আবাসিকদের ব্যবহার এবং বন্দি থাকাকালীন তাঁদের সামগ্রিক কাজ দেখে সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের সুপারিশে ওই আবাসিকদের মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সোমবার প্রত্যেকটি সংশোধনাগারেই স্বাধীনতা দিবস পালনের কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। ওই অনুষ্ঠানসূচির অংশ ছিল জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া এবং যে কোনও দেশাত্মবোধক ছোট নাটকে আবাসিকদের অভিনয়। প্রতিটি সংশোধনাগারেই ওই কর্মসূচিতে যোগ দেন কোনও না কোনও জনপ্রতিনিধি।
প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারেও এক কর্মসূচির আয়োজন করেন কর্তৃপক্ষ। সেখানে যোগ দিয়েছিলেন দক্ষিণ কলকাতার সাংসদ মালা রায় এবং শিশু ও নারীকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা। ঋষি অরবিন্দ ব্রিটিশ সরকারের হাতে গ্রেফতার হয়ে এক সময় বন্দি ছিলেন এই প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারেই। তাঁরই জীবনের একটি অংশভিত্তিক একটি ছোট নাটর অভিনয় করে দেখান সেখানকার আবাসিকরা। অভিনয়ের পরে মন্ত্রী শশী এবং সাংসদ মালা গিয়ে আবাসিকদের সঙ্গে কথা বলেন। শশীর কাছে বিশেষ প্রশংসা পান ঋষি অরবিন্দের চরিত্রে অভিনয় করা আবাসিক। তাঁকে হুবহু ঋষি অরবিন্দের মতো দেখতে লাগছে বলে ওই আবাসিককে জানান মন্ত্রী।
ঘটনাচক্রে, ওই একই সংশোধনাগারে রয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও। কিন্তু তিনি রয়েছেন সংশোধনাগারের উচ্চ নিরাপত্তাযুক্ত সেল-এ। তাঁর পাশাপাশি ওই একই ধরনের কারাকক্ষগুলিতে আছেন সুদীপ্ত সেন, ছত্রধর মাহাতো, গৌতম কুণ্ডুর মতো ‘হাই-প্রোফাইল’ বন্দিরা। তবে তাঁরা কেউই স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচিতে ছিলেন না।