১৫ বছরের এক না কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত বাবার ৩৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল ঝাড়গ্রামের স্পেশাল পকসো আদালত এডিজে ২।
২০১৮ সালে সাঁকরাইল থানার অন্তর্গত একটি গ্রামের ঘটনা। ১৫ বছরের নাবালিকা মেয়েটির মা পাঁচ বছর আগে মারা গিয়েছিল। বাবার সঙ্গেই থাকতো মেয়েটি। ২০১৮ সালের ১৭ জুলাই বাবা তার মেয়েকে দুপুরে ভাত খেতে দিতে বললে সেই মতো মেয়েটি তার বাবাকে ভাত খেতে দেয়। তারপরেই তার বাবা জোর করে মেয়েকে বিছানায় নিয়ে গিয়ে নগ্ন করে ধর্ষণ করে। মেয়েটি কোনক্রমে বাবার কাছ থেকে পালিয়ে বিষয়টি তার জেঠিমাকে বলে। সেই সময় তার কাকিমা এবং প্রতিবেশীরা বিষয়টি জানতে পারে। তারপরেই মেয়েটির বাবাকে বেধড়ক মারধর করেন গ্রামবাসীরা।
নাবালিকা মেয়েটির অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় তাকে ভর্তি করা হয় ভাঙ্গাগড় গ্রামীণ হাসপাতালে। হাসপাতালে পাঁচ দিন ভর্তি ছিল মেয়েটি। ঘটনার দিনই মেয়েটির বাবাকে গ্রেপ্তার করে সাঁকরাইল থানার পুলিশ। গ্রামবাসীরা মারধর করায় জখম হয়েছিলেন নাবালিকার বাবা। তাকেও ভাঙ্গাগড় গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করলে স্থানান্তর করা হয় তৎকালীন ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। ১৯ তারিখ হাসপাতাল থেকে ছাড়া হলে অভিযুক্ত বাবাকে পেশ করা হয় ঝাড়গ্রামের স্পেশাল পোকসো আদালত এডিজে ২ এ। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পুলিশ ৩৭৬ (২) ধর্ষণ এবং ৬ নম্বর পকসো ধারায় মামলার রুজু করে। এক মাসের মাথায় ১৮ আগস্ট আদালতে চার্জশিট জমা দেয় সাঁকরাইল থানার তদন্তকারী অফিসার প্রশান্ত কুমার সিট। বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পরে ১৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণের পর গতকাল অর্থাৎ বুধবার নাবালিকার বাবাকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত।
সরকারি আইনজীবী জয়ন্ত রায় বলেন, “১৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণের পর গতকাল দোষী সাব্যস্ত করলো আদালত।বিচারক বলেন, এটি বিরল ও জঘন্যতম ঘটনা। এরকম ঘটনা ঘটলে কোনো ছেলেমেয়ে তার বাবাকে বিশ্বাস করতে পারবে না। আমার মনে হয়, এক্ষেত্রে এই আইনে সর্বোচ্চ কঠিন থেকে কঠিনতম শাস্তি ঘোষণা করা হয়। ৩৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে তিন মাসের কারাদণ্ড এবং নাবালিকাকে ৩ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।”