অবিশ্বাস্য! ১০০ কিমি পাড়ি দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে পৌঁছল রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার

কোনো কাঁটাতার বা কোনো সীমানা তাকে আটকাতে পারেনি। আটকাতে পারেনি দুদেশের সীমান্তরক্ষীরাও। অনায়াসেই সে প্রবেশ করল ভারত থেকে বাংলাদেশে। অনায়াসে বললে একটু ভুল হবে বৈকি। কারণ তার যাত্রাপথ ছিল দীর্ঘ প্রায় ৪ মাসের।

না, কোনো মানুষ নয়। এই কান্ড ঘটিয়েছে সুন্দরবনের রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। ভারত থেকে বাংলাদেশ পৌঁছতে তার সময় লেগেছে প্রায় ৪ মাস। পাড়ি দিয়েছে ১০০ কিলোমিটারের পথ। আর এই বাঘের গোটা গতিবিধির উপর নজর রেখেছিলেন বনবিভাগের কর্মীরা। কীভাবে? রয়্যাল বেঙ্গলের গলায় যে লাগানো ছিল “রেডিও কলার”। সেই রেডিও কলারের মাধ্যমেই বাঘটির যাত্রাপথ পর্যবেক্ষণ করছিলেন বনকর্মীরা।

বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ এই যাত্রাপথে বেশ কয়েকটি নদী অতিক্রম করে বাঘটি। যার মধ্যে একাধিক নদী এক কিলোমিটারের চেয়েও বেশি প্রশস্ত ছিল।

দেশের প্রধান ওয়াইল্ড লাইফ ওয়ার্ডেন ভিকে যাদব এবিষয়ে জানান, “হরিণভাঙ্গা থেকে বসিরহাট রেঞ্জের অন্তর্গত হরিখালী ক্যাম্পের নিকটে বাঘটিকে ধরা হয়েছিল। এরপর ২৭ ডিসেম্বর স্যাটেলাইট কলার পরিয়ে বাঘটিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কয়েকদিন ভারতের বিভিন্ন জায়গায় ঘোরার পর বাঘটি বাংলাদেশের তালপট্টি দ্বীপে প্রবেশ করে। তারপর ছোট হরিখালী. বড় হরিখালী এবং রায়মঙ্গলের মত নদীগুলি পেরিয়ে সে বাংলাদেশের সুন্দরবনে পৌঁছায়। ”

ভিকে যাদবের মতে, ২৭ ডিসেম্বর থেকে ১১ মে পর্যন্ত রেডিও কলার সংকেত দেয়। তারপরই বন্ধ হয়ে যায় সংকেত দেওয়া। তবে সংকেত বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগে পর্যন্ত বাঘটি হরিণভাঙা, খাতুয়াঝুরি এবং বাংলাদেশের তালপট্টি দ্বীপ অতিক্রম করে। সংকেত বন্ধ হওয়ার আগে রয়্যাল বেঙ্গলের শেষ অবস্থান ছিল বাংলাদেশের সুন্দরবনের অংশে।

১১ মে সিগন্যাল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর বাঘটি কি বেঁচে আছে? এমন প্রশ্নের জবাবে যাদব বলেন, “গ্যাজেটে এমন একটি সেন্সর ছিল যা মৃত্যু ঘটলে সংকেত দিত। কিন্তু সেই সংকেত দেয়নি। তাই এটুকু নিশ্চিত হওয়া যায় যে বাঘটি নিরাপদে আছে। তবে মনে হচ্ছে, বাঘটির গলা থেকে ওই কলারটি খুলে পড়ে গেছে। অথবা সুন্দরবনের জলে লবণাক্ততার কারণে হয়ত কলারের ক্ষতি হয়েছে।”

ভিকে যাদব আরও বলেন, ক্যামেরার ফাঁদও এই বাঘটির ছবি ক্লিক করতে পারেনি। সেক্ষেত্রে এও হতে পারে যে, বাঘটি বাংলাদেশের সুন্দরবন থেকে আসার পরেই আমরা তাকে ধরে কলার পড়িয়ে দিই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.