কোন দিকে ঘুরবে আরজি কর মামলা, সুপ্রিম কোর্টের দিকে তাকিয়ে গোটা রাজ্য, গোটা দেশ

মঙ্গলবার আরজি কর মামলার শুনানি রয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। সারা দেশ তাকিয়ে শীর্ষ আদালতের ওই শুনানির দিকে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে ওই শুনানি হবে। গত শুনানিতে সিবিআইয়ের কাছে তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা শীর্ষ আদালতে কী রিপোর্ট জমা দেয় তা নিয়ে কৌতূহল রয়েছে গোটা দেশের। সিবিআই সূত্রে খবর, মঙ্গলবারও সিবিআই বন্ধ খামে রিপোর্ট জমা দেবে। অন্য দিকে, মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানোর সময় ‘চালান’ তৈরি হয়। রাজ্যকে ওই ‘চালান’ আদালতে জমা করতে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সেই মতো তাদেরও আদালতে ‘চালান’ জমা দেওয়ার কথা।

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে মহিলা এক চিকিৎসককে খুন ও ধর্ষণের ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই। ওই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চ মামলাটি শুনছে। এর আগে মামলাটি তিন বার শুনানির জন্য উঠেছে। এই মামলায় একাধিক বার রাজ্যের ভূমিকার সমালোচনা করেছে শীর্ষ আদালত। পুলিশি তদন্ত নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে তিন বিচারপতির বেঞ্চ। ওই ঘটনায় ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারের পরে সেমিনার হলে আর কারা ঢুকেছিলেন তা-ও রাজ্যের কাছে জানতে চায় আদালত। গত ৯ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, ডাক্তারদের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তায় পদক্ষেপ করতে হবে রাজ্যকে। তাঁদের নিরাপত্তার উপর পুলিশ সুপার পদমর্যাদার অফিসারদের নজর রাখতে হবে। পুরুষ ও মহিলাদের জন্য আলাদা আলাদা বিশ্রাম কক্ষের বন্দোবস্তের পাশাপাশি তাঁদের জন্য শৌচাগার এবং সিসিটিভি বসানো নিয়ে জেলাশাসক তথা রাজ্যকে অবস্থান জানাতে হবে। এমতাবস্থায় ওই বিষয়ে রাজ্য বক্তব্য জানাতে পারে মঙ্গলবার।

ঘটনার পরের দিনের সিসিটিভি ফুটেজের কতটা সিবিআইকে দেওয়া হয়েছে তা নিয়ে রাজ্যের কাছে জানতে চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। গত শুনানিতে সিবিআইয়ের আইনজীবী জানিয়েছিলেন, তাদের ২৭ মিনিটের ফুটেজ দিয়েছে পুলিশ। আরজি কর কাণ্ডে ওই সিভিক ভলান্টিয়ার ছাড়াও প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। আদালতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা জানিয়েছে, ঘটনাস্থল বা সেমিনার হল পরিবর্তন করা হয়েছে। সন্দেহ রয়েছে ফরেন্সিক রিপোর্ট নিয়ে। গত শুনানিতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী তুষার মেহতা জানিয়েছিলেন, দ্বিতীয় বার ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য নমুনা দিল্লির এমসে পাঠানো হবে। ওই নমুনা পরীক্ষা কত দূর এগোল বা কোনও রিপোর্ট এল কি না তা নিয়েও অবস্থান জানাতে পারে সিবিআই।

জুনিয়র ডাক্তারদের ১০ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টার মধ্যে কাজে ফিরতে বলেছিল সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি বেঞ্চের নির্দেশ ছিল, ওই সময়ের মধ্যে কাজে যোগ দিলে রাজ্য ওই চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করতে পারবে না। রাজ্যও শীর্ষ আদালতে আশ্বাস দেয়, কড়া পদক্ষেপ তো দূর তাঁরা কাজে যোগ দিলে বদলির মতো সিদ্ধান্তও নেওয়া হবে না। যদিও সুপ্রিম কোর্টের ওই পর্যবেক্ষণ মেনে কাজে ফেরেননি অনেক জুনিয়র ডাক্তার। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে ডাক্তারদের কর্মবিরতির বিষয়টিও উঠতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.