সংসদে সোমবার শুরু হওয়া বাজেট অধিবেশনে নিট কেলেঙ্কারি নিয়ে কেন্দ্রের উপর চাপ তৈরি করেছে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’। সোমবার অধিবেশন শুরু হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভাতেও। বিধানসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই অধিবেশনেও আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ জায়গা পেতে চলেছে নিট কেলেঙ্কারি। মঙ্গলবারই নিট নিয়ে ১৬৯ ধারায় একটি প্রস্তাব পাশ করা হবে বিধানসভায়। বুধবার এই বিষয়ে আলোচনার জন্য দু’ঘণ্টা সময় বরাদ্দও করা হয়েছে বিধানসভার সূচিতে।
রবিবার ২১ জুলাইয়ের সমাবেশ থেকেই নিট কেলেঙ্কারি নিয়ে সরব হয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নিটের প্রশ্নফাঁস কেলেঙ্কারিকে ‘স্বাধীনতা পরবর্তী ভারতের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি’ বলে মন্তব্য করেছিলেন তিনি। একই সঙ্গে দাবি তুলেছিলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের গ্রেফতারি নিয়েও। সোমবার বিধানসভার আলোচ্যসূচি প্রকাশ্যে আসার পরে অনেকেই মনে করছেন, বিজেপিকে আক্রমণের ব্যাপারে অভিষেকের ঠিক করে দেওয়া ‘দিশা’ থেকেই ইঙ্গিত নিয়ে বিধানসভার সূচি ঠিক করা হয়েছে। তবে ছ’দিনের বিধানসভা অধিবেশনে শুধু নিট নয়, প্রস্তাব পাশ করানো হবে কেন্দ্র প্রণীত তিনটি নতুন ফৌজদারি আইন— ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা এবং ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম নিয়েও।
গত বছর ডিসেম্বরে সংসদের দুই কক্ষের প্রায় দেড়শো বিরোধী সাংসদকে সাসপেন্ড করে ওই তিন আইন পাশ করিয়েছিল কেন্দ্রের দ্বিতীয় মোদী সরকার। অন্য দিকে, বিরোধী নেতারা প্রথম থেকেই এই তিন আইনকে ‘রাওলাট আইন’ বলে দেগে দিয়ে তার বিরোধিতা করেছিলেন। বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’র যুক্তি ছিল, এই আইনে পুলিশ এবং রাষ্ট্রকে অসীম ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, ফিরিয়ে আনা হয়েছে রাষ্ট্রদ্রোহের ধারা, যা যে কোনও সময় যে কোনও ব্যক্তি বা রাজনৈতিক নেতার বিরুদ্ধে ইচ্ছামতো কাজে লাগাতে পারবে কেন্দ্র। বিধানসভার সূচি বলছে, আগামী শুক্রবার এই বিষয়েও আলোচনা হবে। শুক্রবার সকাল ১১টায় তিন ফৌজদারি আইন নিয়ে একটি প্রস্তাব পাশ করা হবে বিধানসভায়। তার পরে তা নিয়ে দেড় ঘণ্টা আলোচনাও হবে। নিট এবং নতুন ফৌজদারি আইন সংক্রান্ত এই দু’টি আলোচনাতেই অংশগ্রহণ করবেন বিধানসভার প্রধান বিরোধী বিজেপির বিধায়কেরা।
সোমবার ওই বিষয়ে বিধানসভায় বিজেপির পরিষদীয় দলের বৈঠক হয়েছে। বৈঠকের সভাপতিত্ব করেছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর নেতৃত্বে ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, নিট এবং ফৌজদারি আইন সংক্রান্ত দু’টি আলোচনায় অংশগ্রহণের পাশাপাশি রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ, উত্তরবঙ্গে জমি দখল সংক্রান্ত অভিযোগ নিয়েও আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হবে বিজেপির তরফে। বিধানসভার সূচিতে এ ছাড়াও রাজ্যের তফসিলি জাতি, উপজাতি এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির উন্নয়ন ও ফিন্যান্স কর্পোরেশন বিলে সংশোধনী আনার কথা বলা হয়েছে। আলোচনার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে দেড় ঘণ্টা।