দিঘায় এক পর্যটককে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল। হোটেলের ঘর দেখানোর নাম করে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পলাতক দু’জন। তাঁদের খোঁজে নানা জায়গায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে। সোমবারই ধৃতদের আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাঁদের ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত শনিবার পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা ওই তরুণী তাঁর এক বন্ধুর সঙ্গে দিঘায় বেড়াতে যান। সেখানে গিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরার পর রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ তাঁরা ঠিক করেন, দিঘাতেই রাত কাটাবেন। সেই মতো নিউ দিঘায় হোটেল খুঁজতে শুরু করেন তাঁরা। অভিযোগ, সেই সময়েই মোটরবাইক নিয়ে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা তিন যুবক তাঁদের হোটেলের ঘর দেখানোর নাম করে বাইকে তুলে নেন। এর পর তাঁদের ওড়িশার দিকে দিঘাশ্রী পেরিয়ে একটি অন্ধকার জায়গায় নিয়ে যান। সেখানেই ওই তরুণীকে বেধড়ক মারধর করে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, সেই সময় তরুণীর বন্ধুকে মারধর করে সামনেই বেঁধে রাখা হয়েছিল।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুষ্কৃতীদের অত্যাচারে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন ওই তরুণী। পরে দুষ্কৃতীরা ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে গেলে তরুণীর বন্ধুই তাঁকে নিয়ে দিঘা থানায় যান। পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে তরুণী জানিয়েছেন, তাঁর উপরে অত্যাচার চালানো হয়েছে। তদন্তে নেমে রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে দিঘা লাগোয়া রতনপুর থেকে অভিযুক্ত দু’জনকে গ্রেফতার করে। সোমবার তাঁদের কাঁথি মহকুমা আদালতে হাজির করানো হয়।
কাঁথি আদালতে সরকারি আইনজীবী ইকবাল হোসেন জানান, তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে দিঘা থানার পুলিশ। ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬, ৩৭৯ এবং ৩৪ ধারায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। সেই সঙ্গে ওই তরুণীর গোপন জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘দিঘার মতো জনপ্রিয় জায়গায় এ ভাবে দুষ্কৃতীর তাণ্ডবের ঘটনা প্রথম বার প্রকাশ্যে এসেছে। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই পর্যটনকেন্দ্রে এ ভাবে দুষ্কৃতীরা যাতে ঘুরে বেড়াতে না পারে, তার জন্য পুলিশের আরও তৎপর হওয়া উচিত। এবং অভিযুক্তদেরও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার। দুই অভিযুক্তকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
এই ঘটনার নিন্দা করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ মানুষের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। এই রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী এক জন মহিলা। তিনিই আবার পুলিশমন্ত্রী। অথচ দিঘার মতো জায়গায় প্রকাশ্যে দুষ্কৃতীদের হাতে এক জন মহিলা অত্যাচারিত হলেন! এটা চরম লজ্জার! দিঘার মতো পর্যটনকেন্দ্রে যে ভাবে ওই মহিলার উপর অত্যাচার হয়েছে, তার বিরুদ্ধে বিধানসভায় বিজেপির মহিলা বিধায়কদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হবে।’’