আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ায় আবার হিন্দু মন্দিরের দেওয়ালে খলিস্তানপন্থীদের বিতর্কিত স্লোগান লেখার ঘটনা ঘটল। সেখানকার হেওয়ার্ড শহরের বিজয় শেরাওয়ালি মন্দিরের খলিস্তানপন্থীরা ভারত-বিরোধী স্লোগান লিখেছে বলে শুক্রবার ‘হিন্দু আমেরিকান ফাউন্ডেশন’ (এইচএএফ)-এর তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছে।
সমাজমাধ্যমে শেরাওয়ালি মন্দিরের সেই বিতর্কিত স্লোগানের ছবি পোস্ট করা হয়েছে এইচএএফ-এর তরফে। লেখা হয়েছে, ‘‘আবার একটি হিন্দু মন্দিরে খলিস্তানি স্লোগান লেখার ঘটনা ঘটল।’’ প্রসঙ্গত, গত ডিসেম্বরের শেষ পর্বে ক্যালিফোর্নিয়া প্রদেশের নিউয়ার্ক শহরের স্বামীনারায়ণ মন্দিরের দেওয়ালে কালো রঙে খলিস্তানপন্থী স্লোগান লেখা হয়েছিল।
ঘটনার নেপথ্যে কানাডায় আত্মগোপনকারী জঙ্গি নেতা গুরুপতবন্ত সিংহ পন্নুনের সংগঠন ‘শিখস ফর জাস্টিস’ (এসএফজে) রয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে। হিন্দু আমেরিকান ফাউন্ডেশন’ পরিচালিত ‘স্বামীনারায়ণ মন্দির বাসনা সংস্থা’র তরফে পুলিশের পাশাপাশি অভিযোগ জানানো হয়েছে নাগরিক অধিকার আদালতেও। স্বামীনারায়ণ মন্দিরে খলিস্তানি হানাদারির পরে ক্যানিফোর্নিয়ার রাজধানী সান ফ্রান্সিসকোর ভারতীয় কনস্যুলেটের তরফে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সরকারের কাছে এ বিষয়ে ‘বার্তা’ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও প্রয়োজনীয় পুলিশি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
প্রসঙ্গত, আমেরিকা, কানাডা, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া-সহ কয়েকটি দেশে সক্রিয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন এসএফজে চায় পঞ্জাবের মধ্যে ‘স্বাধীন এবং সার্বভৌম’ খলিস্তান রাষ্ট্র গড়তে। ২০১৯ সালের ১০ জুলাই এসএফজেকে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র। জানিয়েছিল, ভারতের সার্বভৌমত্ব এবং ভৌগোলিক অখণ্ডতার জন্য বড়সড় হুঁশিয়ারি এই সংগঠন। ২০২০ সালে সংগঠনের নেতা পন্নুনকে জঙ্গি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
কিন্তু তার পরেও কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সরকারের মদতে সে দেশে বসে পন্নুন ধারাবাহিক ভাবে ভারত-বিদ্বেষী প্রচার চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ নয়াদিল্লির। সম্প্রতি, আমেরিকার তরফে অভিযোগ উঠেছে এসএফজে প্রধান পন্নুনকে খুনের চেষ্টায় জড়িত রয়েছেন ভারতীয় গুপ্তচরেরা। আমেরিকান কংগ্রেসের ভারতীয় বংশোদ্ভূত পাঁচ সদস্যের তরফেই এসেছে ওই অভিযোগ। যা নিয়ে কূটনৈতিক ক্ষেত্রে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। চলতি বছর সিডনি এবং অটোয়ায় হিন্দু মন্দিরের খলিস্তানপন্থী স্লোগান লেখার অভিযোগ উঠেছিল এসএফজের বিরুদ্ধে। কানাডা, আমেরিকা এবং ব্রিটেনে ভারতীয় দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভও দেখিয়েছে খলিস্তানপন্থীরা।