রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর বনাম সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ম্যাচটি ছিল বিরাট কোহলিদের কাছে মরণ-বাঁচনের। ম্যাচ জিতলে প্লে অফের আশা ভালভাবে বেঁচে থাকবে ব্যাঙ্গালোরের। দিনান্তে কোহলি-ডু প্লেসির দাপটে ম্যাচ জিতে নিল আরসিবি। আর এই জয়ের ফলে প্লে অফের দৌড়ে প্রবল ভাবে ঢুকে পড়ল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স। বিরাট কোহলিরা ম্যাচ জেতার ফলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের প্লে অফে যাওয়ার সব স্বপ্ন কার্যত শেষ হয়ে গেল। খাতায় কলমে কেকেআরের প্লে অফে পৌঁছনোর ক্ষীণ একটা সুযোগ ছিল। কিন্তু আরসিবি বৃহস্পতিবার জিতে নাইটদের সেই আশায় জল ঢেলে দিল। শুধু কেকেআর কেন, মুম্বই ইন্ডিয়ান্স, রাজস্থান রয়্যালসের পথও তো কণ্টকাকীর্ণ করে দিল আরসিবি। এক জয়ে একাধিক দলের স্বপ্নও ভেঙে দিল কোহলির আরসিবি।
কোহলি ধরা দিলেন বিরাট অবতারে। তাঁর ওপেনিং সঙ্গী ফ্যাফ ডু প্লেসিও চেনা ছন্দে ছিলেন। আর এই দুই তারকা চলতে শুরু করলে আরসিবি-কে রোখে কার সাধ্যি! সানরাইজার্স হায়দরাবাদও পারেনি। কোহলি হাঁকালেন ‘বিরাট’ সেঞ্চুরি। এবারের আইপিএলে তাঁর প্রথম শতরান। কিন্তু আইপিএলের ইতিহাসে তিনি এবং ক্রিস গেইল একই বন্ধনীতে। দু’ জনের সেঞ্চুরির সংখ্যা ৬। ৯৪ থেকে ছক্কা হাঁকিয়ে কোহলি সেঞ্চুরিতে পৌঁছন এদিন। কিন্তু সেঞ্চুরির পরের বলেই তাঁকে ফিরতে হয়। তিনি নিজেও হতবাক হয়ে যান। হয়তো ভেবেছিলেন তাঁর মারা শটটা গ্যালারিতে আছড়ে পড়বে। কোহলির ৬৩ বলে ১০০ রানের ইনিংসটা অনেকেই মনে রাখবেন বহুদিন। তাঁকে যোগ্য সঙ্গত করে গেলেন ফ্যাফ ডু প্লেসি। ১৭২ রানে প্রথম উইকেট যায় আরসিবি-র। দক্ষিণ আফ্রিকার তারকা ডু প্লেসি ফেরেন ৭১ রানে। বাকি কাজটা সারেন ম্যাক্সওয়েল ও ব্রেসওয়েল। দুরন্ত এই জয়ের ফলে আইপিএলের পয়েন্ট তালিকায় আরসিবি পাঁচ নম্বর থেকে উঠে এল চারে। চার থেকে পাঁচে নেমে গেল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। উল্লেখ্য, এখনও একটি ম্যাচ বাকি রয়েছে আরসিবি-র। তাদের রান রেটও বেশ ভাল।
বৃহস্পতিবার সানরাইজার্স হায়দরাবাদ প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে তোলে পাঁচ উইকেটে ১৮৬ রান। সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে বেশ ভাল জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার পিছনে রয়েছে ক্লাসেনের দুরন্ত সেঞ্চুরি। ৫১ বলে ১০৪ রান করে ফিরে যান ক্লাসেন। আটটি বাউন্ডারি ও ছ’টি ছক্কায় সাজানো ছিল তাঁর ইনিংস। ক্লাসেন ছাড়া সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বাকি ব্যাটাররা ভাল রান পাননি। হ্যারি ব্রুক ১৯ বলে ২৭ রান করে অপরাজিত থেকে যান। ক্লাসেনের দুরন্ত ব্যাটিংয়ে ম্লান হয়ে যান বাকিরা। আরসিবি বোলাররাও ক্লাসেনকে থামানোর উপায় খুঁজে পাননি।
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ১৮৬ রান কম নয়। কিন্তু যে দলে বিরাট কোহলি ও ফ্যাফ ডু প্লেসির মতো তারকা ব্যাটার থাকেন, সেই দল যে খুব সহজেই ম্যাচ জিতবে তা বলাই বাহুল্য। আরসিবি-র কাছে এদিনের ম্যাচটি ছিল সব দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ। এরকম কঠিন পরিস্থিতিতে বহুবার ঝলসে উঠেছে কোহলির ব্যাট। এদিনও কোহলির ব্যাট কথা বলল। অন্য দিকে ডু প্লেসিও ধ্বংস করে গেলেন সানরাইজার্সের বোলিং। খেলা যত এগোলো কোহলিকে ততই ভয়ংকর দেখালো। এই বিরাট কোহলিকেই সবাই দেখতে চান।