দুর্নীতির বদলে ধর্ষণ-খুনের অভিযোগে সন্দীপ ঘোষ গ্রেফতার হলে ইচ্ছেপূরণ হত: স্বস্তিকা

প্রতিবাদে কোনও রাজনৈতিক রং লাগতে দেবেন না, এমনটাই আভাস ছিল তাঁর। তার পরেও মঙ্গলবার ভূপেনচন্দ্র বোস অ্যাভিনিউয়ে বাম ছাত্রসংগঠনের রাতদখল কর্মসূচিতে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। সেখান থেকেই আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বললেন, “দুর্নীতির জন্য গ্রেফতার সন্দীপ ঘোষ। ধর্ষণ-খুনের জন্য নয়। দ্বিতীয় কারণে গ্রেফতার হলে বেশি খুশি হতাম। যাই হোক, এই ছোট ছোট পদক্ষেপই হয়তো লক্ষ্যে পৌঁছে দেবে।”

আশার আলো ক্ষীণ। তবু আশাহত নন তিনি। সেই জোরেই বিনিদ্র রজনী কাটাচ্ছেন স্বস্তিকা। আর টালা থেকে টালিগঞ্জ চষে ফেলছেন। ক্লান্তি আসছে? জবাবে বললেন, “এমনিতেই নিদ্রাহীনতায় ভুগি। ঘুমের ওষুধ না খেলে ঘুম আসে না। ভাবছি, এই ক’দিন আর ঘুমের ওষুধ খাব না। বিচার পান মৃতা। তার পর স্বস্তি নামবে দু’চোখের পাতায়।”

সোমবার সন্দীপ ঘোষের গ্রেফতারি। মঙ্গলবার লালবাজারের ভিতরে পা রাখতে পেরেছেন অবস্থানরত চিকিৎসকেরা। খুশি অভিনেত্রী? একটু থেমে জানালেন, মানুষের সঙ্গে মানুষ কথা বলবে এটাই তো রীতি। তার জন্য ২২ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে! সভ্য দেশের এটাই রীতি? তবু আগের অবস্থান থেকে ১০০ মিটার এগোতে পেরেছেন চিকিৎসকেরা। একেই অগ্রগতি বলে মানছেন। একই সঙ্গে তারিফ করেছেন শহর, শহরবাসীদের মানবিকতায়। অবস্থান মঞ্চে এসে জুনিয়র চিকিৎসকদের খাবার, জল সরবরাহ করছেন সব ধর্মের মানুষ। আশপাশের বাড়ির মহিলারা। ভোরে প্রশাসনের তরফ থেকে চা-বিস্কুট দেওয়া হয়েছে অবস্থানকারীদের।

ঠিক তার উল্টো ছবি উঠে আসছে শাসকদলের অভিনেতা-রাজনীতিবিদদের থেকে। যেমন, কাঞ্চন মল্লিক। যিনি একই সঙ্গে চিকিৎসক এবং অভিনেতাদের কটাক্ষ করে কোণঠাসা। ভিডিয়োবার্তায় ক্ষমা চাইতে বাধ্য হয়েছেন। কথা ফুরোতেই স্বস্তিকার মন্তব্য, “গত কালের ভিডিয়োর পুরোটা দেখতে পারিনি। যেটুকু দেখেছি তাতে মনে হল, কাঞ্চনদা জোর করে ক্ষমা চেয়েছেন। ওঁর ভিতর থেকে কোনও অনুভূতিই নেই।” আরও যোগ তাঁর, আজীবন মেয়েরাই কেবল ক্ষমা চেয়ে গেল। আজও পুরুষ ক্ষমা চাইতে গিয়ে দ্বিধায় ভোগে!

পাশাপাশি তিনি সরব ‘অপরাজিতা বিল’ নিয়েও। অভিনেত্রীর এ ক্ষেত্রে পাল্টা প্রশ্ন, “একগাদা আইন কেবল আক্রান্ত হওয়ার পর কী করতে হবে? আক্রমণটাই যাতে না হয় তার জন্য বিল কই?”

স্বস্তিকাকে ঘিরে তখন নানা বয়সের দলীয় কর্মী। তাঁরা কেউ পোস্টার বানাচ্ছেন। কেউ রাস্তায় আঁকছেন। নায়িকা কেন রাজনৈতিক মঞ্চে? একটু সময় নিয়ে জবাব দিলেন, “অনেক দিন দেশের বাইরে ছিলাম। আর অপরাধবোধে ভুগছিলাম। শহর জাগছে। আন্দোলনে ফুটছে। আমি কী করছি? বলতে পারেন সেই খামতি পূরণের চেষ্টা করছি। সকলের সঙ্গে এখন এ ভাবেই জড়িয়ে থাকব।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.