‘আমি যদি মরে যাই…’, পঞ্জাবের প্রাক্তন ডিজিপির পুত্রের মৃত্যুর রহস্যে নতুন মোড় ‘সরিয়ে ফেলা ডায়েরি’! তদন্তে হরিয়ানার সিট

পঞ্জাব পুলিশের প্রাক্তন ডিজি মহম্মদ মোস্তাফা এবং সে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজ়িয়া সুলতানের পুত্র আকিল আখতারের খুনের মামলায় নতুন রহস্য যোগ করল একটি ডায়েরি। পরিবারের সদস্যদের নামে নানা অভিযোগ করে সমাজমাধ্যমে লেখালেখি করতেন আকিল। একটি পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, তাঁকে বিষক্রিয়া করে মারা হতে পারে। ওই পোস্টের সঙ্গে ডায়েরির পৃষ্ঠার ছবি দিয়েছিলেন প্রাক্তন ডিজিপি এবং প্রাক্তন মন্ত্র্রীর পুত্র। কিন্তু ওই ডায়েরি আকিলের ঘরে নেই বলে জানাচ্ছেন তদন্তকারীরা। হরিয়ানার পঞ্চকুলা পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) এখন ওই ডায়েরির জন্য যোগাযোগ করছে প্রাক্তন ডিআইজি-র সঙ্গে।

গত ৩ অক্টোবর, মৃত্যুর সপ্তাহ দুয়েক আগে আকিল সমাজমাধ্যমে লিখেছিলেন, ‘‘আমি যদি মারা যাই, এই ডায়েরিতেই পাওয়া যাবে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কিত তথ্য। এবং অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড দিয়ে আমায় মারা হয়েছে কি না, তা পরীক্ষা করতে হবে।’’ ঘটনাক্রমে গত বৃহস্পতিবার পঞ্চকুলার বাড়ি থেকে যুবকের গদেহ উদ্ধার হয়। পরিবারের দাবি, ১৮ বছর ধরে মাদকাসক্ত ছিলেন আকিল। প্রচুর ওষুধ খেতে হত। মাত্রাতিরক্ত ওষুধ খেয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পর হরিয়ানার পুলিশও সে কথা বলেছিল। কিন্তু এর পর তদন্তকারীদের হাতে আসে ভিডিয়ো। যেখানে আকিল তাঁর প্রাক্তন আইপিএস অফিসার বাবার সঙ্গে স্ত্রীর পরকীয়ার কথা উল্লেখ করেন। তিনি এ-ও জানান, এই সত্য জানার পর থেকে তিনি মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত। তাঁকে মেরে ফেলা হতে পারে। ঘটনাক্রমে পঞ্জাব পুলিশের ডিজি মোস্তাফা, তাঁর স্ত্রী এবং পুত্রবধূর বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করেছে পুলিশ। এফআইআর দায়েরের পরে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের কথা বলে সদ্যমৃত পুত্রের নানা কাণ্ডের কথা বলেন প্রাক্তন আইপিএস অফিসার। এফআইআর দায়েরের পর তাঁর মন্তব্য, ‘‘সত্য বাইরে আসুক। কারণ, এখানে কিছুই আর লুকোনোর নেই।’’

কিন্তু হরিয়ানা পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার আকিলের ঘরে তল্লাশি করতে গিয়েও ওই ডায়েরি তারা পায়নি। আগে মোস্তাফাকে ছেলের ওই ডায়েরির কথা জিজ্ঞাসা করায় তিনি জানিয়েছিলেন, আকিলের মোবাইল এবং ডায়েরি দুটোই তিনি গ্রামের বাড়িতে পুত্রের দেহের সৎকারের জন্য গিয়েছেন। গ্রামের বাড়়ি থেকে পঞ্চকুলায় ফেরার পর পুলিশের হাতে সেগুলো তুলে দেবেন। জানা যাচ্ছে, আগামী ২৬ অক্টোবর পঞ্চকুলায় ফিরবেন মোস্তাফারা। তার পর তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ। এর আগেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছিল মোস্তাফাদের। কিন্তু আকিলের দেহ সৎকার না করে থানায় যেতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন বাবা।

হরিয়ানা সরকার জানিয়েছে, তারা এই মামলার তদন্তভার প্রয়োজনে সিবিআইয়ের হাতে দিতে প্রস্তুত। তবে পঞ্চকুলার পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দলের দাবি, তারা আকিলের মৃত্যুর রহস্যভেদ করে ফেলেছে প্রায়। আর কয়েক দিন লাগবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.