কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো স্কুল শিক্ষকদেরও পদোন্নতির ভাবনা, শীঘ্রই সুপারিশ শিক্ষা দফতরকে

বিশ্ববিদ্যালয়ে যে পদ্ধতিতে শিক্ষকদের পদোন্নতি হয়, অনেকটা সেরকম ভাবেই স্কুল শিক্ষকদের পদোন্নতির চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য সম্প্রতি এমনই জানিয়েছেন। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে যেমন শিক্ষকদের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর, অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর এবং প্রফেসর— এই তিনটি ভাগে পদোন্নতি হয়, স্কুলের শিক্ষকদেরও সে রকম পদোন্নতি হতে পারে। কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন শিক্ষকের যেমন ‘অ্যাকাডেমিক পারফর্মেন্স ইন্ডিকেটর’এর (এপিআর) মাধ্যমে পদোন্নতি হয়, স্কুল শিক্ষকদের ক্ষেত্রেও তেমন চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে বলে জানান চিরঞ্জীব।

এপিআর-এ এক জন শিক্ষকের পড়ানোর পাশাপাশি কী বিষয় নিয়ে গবেষণা করছেন, গবেষণাপত্র প্রকাশ করছেন কি না, কোনও বই প্রকাশ করছেন কি না, দেশে বা দেশের বাইরে কোথাও গবেষণাপত্র পড়তে যাচ্ছেন কি না, পড়ুয়াদের নিয়ে ক্লাসরুম শিক্ষার বাইরে কোথাও শিক্ষামূলক ভ্রমণ করতে যাচ্ছেন কি না, এ সব নানা দিক দেখা হয়। পাশাপাশি অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর বা প্রফেসর হতে গেলে ইন্টারভিউও দিতে হয়। চিরঞ্জীব জানান, স্কুল শিক্ষকদের ক্ষেত্রেও অনেকটা এরকম হতে পারে। ওই শিক্ষক প্রয়োজনে স্কুলে অতিরিক্ত ক্লাস নিচ্ছেন কি না, শিক্ষামূলক ভ্রমণ করছেন কি না, স্কুলে পড়ানো ছাড়া স্কুলে প্রশাসনিক কাজও করছেন কি না, তা দেখা হবে। চিরঞ্জীব বলেন, ‘‘এখন স্কুলে নানা সামাজিক প্রকল্প চলছে। যেমন মিড ডে মিল, কন্যাশ্রী প্রকল্প সহ নানা প্রকল্প। আছে বিভিন্ন ক্লাসে বৃত্তি পরীক্ষা। এ সব কাজের সঙ্গে এক জন শিক্ষক কতটা যুক্ত, সেটাও দেখা হতে পারে। এ ছাড়া শিক্ষকেরা গবেষণামূলক কোনও কাজ করছেন কি না বা বই প্রকাশ করছেন কি না, তা-ও বিবেচ্য হতে পারে।’’

চিরঞ্জীব জানান, খুব শীঘ্রই ছয় সদস্যের কমিটি শিক্ষা দফতরকে তাঁদের প্রস্তাব জমা দেবেন। এ দিকে শিক্ষকদের পদোন্নতি কী পদ্ধতিতে হতে পারে, তা নিয়ে প্রস্তাব দিয়েছে শিক্ষক সংগঠন বৃহত্তর গ্রাজুয়েট টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন, মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি এবং অল পোস্ট গ্র্যাজুয়েট টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন। বৃহত্তর গ্র্যাজুয়েট টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সম্পাদক ধ্রুবপদ ঘোষাল বলেন, ‘‘শিক্ষকদের পদোন্নতির সঙ্গে সঙ্গে গ্র্যাজুয়েট শিক্ষকদের পে স্কেলও বাড়াতে হবে। শিক্ষকরা অনেক সময় গবেষণার সুযোগ পান না। সেই সুযোগ দিতে হবে।’’

মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির তরফে জানানো হয়, শিক্ষকদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে তাঁরা ১২টি বিষয় কমিটির বিবেচনার জন্য বলেছেন। সকল স্কুলের প্রধান শিক্ষক, সহ শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী, গ্রন্থাগারিকদের ৮-১৬-২৪ বছরের অভিজ্ঞতাজনিত ইনক্রিমেন্টের তথা ‘কেরিয়ার অ্যাডভান্সমেন্ট স্কিম’ কার্যকর করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.