অ্যাকাডেমিতে ‘রাত দখলের’ কর্মসূচিতে সস্ত্রীক যোগ দিয়েছিলেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। জানিয়েছিলেন, প্রতিবাদের রাত তাঁর কাছেও খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর মতে, রাত কোনও বিশেষ লিঙ্গের হতে পারে না। তা সুনিশ্চিত করার দায়িত্ব প্রশাসনের। আনন্দবাজার অনলাইনকে পরমব্রত বলেন, “সূর্য ডুবলে মহিলাদের বলা হয়, ‘এখানে যেও না। এটা কোরো না, সেটা কোরো না।’ সারা পৃথিবীতে যখন লিঙ্গবৈষম্য দূর করার কথা বলা হচ্ছে, সেখানে রাতে মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বার বার। নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দায়িত্ব কলকাতার প্রশাসনের, হাথরাসের প্রশাসনের, উন্নাওয়ের প্রশাসনের ও গুরুগ্রামের প্রশাসনের।”
তিনি আরও যোগ করেন, “কলকাতাবাসী হিসাবে ভারতের মধ্যে কলকাতা শহরকে এখনও নিরাপদ মনে করি আমি। সেখানে হাসপাতালের ভিতরে এ ধরনের ঘটনা ভাবা যায় না। সচেতন হতেই হয়, আমাদের কোথাও একটা বড় ভুল হয়েছে।” সে ক্ষেত্রে প্রশাসনের কাছে দাবি জানাতেই হবে বলে মনে করেন অভিনেতা। দাবি জানান, কর্মক্ষেত্রে নারীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা করতেই হবে পুলিশ-প্রশাসনকে, কোনও দিন বা সময় নির্বিশেষে।
মধ্যরাতে কলকাতা শহরে এক দিকে মেয়েদের ‘রাত দখলের’ কর্মসূচি, অন্য দিকে তুলকালাম পরিস্থিতি আরজি কর হাসপাতালে… প্রশ্ন শেষ না হতেই পরমব্রত বলেন, “কিসের জন্য ভাঙচুর হল এখনও জানি না আমি। তাই এই মুহূর্তে কোনও মন্তব্য করতে পারব না। অনুমানের ভিত্তিতে কোনও কথা বলতে চাই না।” তাঁর মতে, দেশের নানা প্রান্তে প্রায়শই এই ধরনের নারকীয় ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনার ধারা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত। সর্বস্তরে, সর্বক্ষেত্রে, সর্বরাজ্যের প্রশাসনকে যে কোনও নাগরিকের সুরক্ষা সুনিশ্চিত করতে হবে, বিশেষ করে কর্মক্ষেত্রে নারীদের সুরক্ষার দিকে নজর দিতে হবে।
এত কিছুর মধ্যেও আশাবাদী পিয়া চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “নারী আন্দোলনের মূল লক্ষ্য সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র। ইতিহাস আমাকে শিখিয়েছে, আমার দিদা যেটা পারতেন না, আমার মা পেরেছেন। আবার আমার মায়ের ক্ষেত্রে কিছু সীমাবদ্ধ ছিল, সেটা আমি পেরেছি। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি অবশ্যই, কিন্তু তার পথে অনেক বাধা আসছে।” তিনি আরও যোগ করেন, “এত লড়াইয়ের পরেও যে বাধাবিপত্তি আসছে তা দূর করতে আন্দোলন এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। পুরো সমাজ ও সিস্টেমের উন্নতি দরকার। অধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। শরীরের পাশাপাশি মন ও আত্মার উপর হিংসা এটি।”