দেউচা পাচামিতে এবার আন্দোলন শুরু হয়েছে। কারণ সেখানের বেশিরভাগ আদিবাসী এখন কয়লাখনি চাইছেন না। এমনকী রাজ্য সরকারের পুনর্বাসন প্যাকেজও নিতে রাজি নয়। ফলে এক অস্থির পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আর এই প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে চায় তৃণমূল কংগ্রেস সরকার। তাই কিছুদিন আগেই বিজেপি ঘনিষ্ঠ আদিবাসী গাঁওতা নেতা সুনীল সোরেনকে দলে নিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের বীরভূম জেলার সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। কিন্তু আজ আদিবাসী মোড়লরা বৈঠকে বসেছিলেন। এই বৈঠকেই কয়লা খনির বিপক্ষেই রায় দিয়েছেন মোড়লরা।
সম্প্রতি বিধানসভায় দাঁড়িয়ে এই প্রকল্প নিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘সিঙ্গুরে যেভাবে জমি অধিগ্রহণ শুরু হয়েছিল, আমরা সেভাবে করব না। আমরা প্রথমে নিজেদের জমি দিয়ে শুরু করব। তার পর কেউ জমি দিলে দেওয়া হবে আর্থিক ক্ষতিপূরণ ও বাড়ি।’ সুতরাং সবাই ভেবেছিল এই প্রকল্প সহজেই বাস্তবায়িত হবে। এখন দেখা গেল বিষয়টি বেশ জটিল।ট্রেন্ডিং স্টোরিজ
কী সিদ্ধান্ত হয়েছে বৈঠকে? নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক মোড়ল বলেন, ‘আজকে আমরা জড়ো হয়েছি। আর কয়লা খনির বিরুদ্ধে গণ আন্দোলনের দিকে এগোচ্ছি। সরকার এখানকার মানুষের সঙ্গে কোনও আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়নি। আমাদের মতামত জানতে চাওয়া হয়নি। আমরা উচ্ছেদের আশঙ্কা করেছি। আমরা জমি-জায়গা ছাড়তে রাজি নই। আমরা কয়লা খনি চাই না। প্যাকেজ চাই না।’
আর আদিবাসী গাঁওতা নেতা রবীন সোরেনের বক্তব্য, ‘আদিবাসীরা ভয়ের মধ্যে রয়েছে। প্রশাসন গ্রামে এসে সরাসরি কথা বলুন। তাহলে সমস্যা মিটতে পারে। গ্রামবাসীরা সংশয়ে রয়েছে। যে প্যাকেজ দেওয়া হয়েছে তা পছন্দ হয়নি।’ তাহলে কী চাহিদা আরও বেশি? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আজ বৈঠকের পর কয়লা খনির বিপক্ষেই রায় দিয়েছে আদিবাসী সমাজ।
ফলে এই প্রকল্প ঘিরে অনিশ্চয়তা তৈরি হল বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ জমি তাঁরা দিতে রাজি নন। আবার কয়লা খনিরও পক্ষে নন। এই পরিস্থিতিতে জট প্রশাসন কিভাবে কাটাবে এখন সেটাই দেখার। এখানে যদি জমি আন্দোলন শুরু হয় তাহলে বিজেপি ফায়দা নেবে বলে মনে করা হচ্ছে। আর সেই বার্তা গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়বে। আট থেকে দশটি গ্রামের ২৫০ জন আদিবাসী জমি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।