এ বার দেশে চালু হতে চলেছে হাইড্রোজেন ট্রেন। চলতি বছরেই যাত্রা শুরু করবে নতুন দিনের ট্রেন। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরোদমে চলছে প্রস্তুতি। আগামী ডিসেম্বর থেকেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় হাইড্রোজেন ট্রেন চলবে। বাংলাও একটি ট্রেন পেতে পারে। সম্পূর্ণ দূষণমুক্ত সফরের সুযোগ হয়ে যেতে পারে দার্জিলিঙের টয় ট্রেনে। বুধবার সাধারণ বাজেটে এমনই ঘোষণা করতে পারেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। শুধু এই নতুন ধরনের ট্রেনই নয়, রেলের একগুচ্ছ পরিকল্পনা উঠে আসতে পারে তাঁর বাজেট বক্তৃতায়। রেল মন্ত্রক সূত্রের দাবি, এ বার রেলের যে সব পরিকল্পনার কথা ঘোষণা হতে পারে তাতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেতে চলেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ স্লোগান।
এখনও পর্যন্ত বিশ্বে দু’টি মাত্র দেশে হাইড্রোজেনচালিত ট্রেন চলে। জার্মানি ও চিন। তৃতীয় দেশ হিসাবে ভারত যে ২০২৩ সালেই আধুনিক মানের ওই ট্রেন চালাতে চায়, তা আগেই জানিয়েছিলেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। তাঁর ঘোষণা মতো, চলতি বছরের মে, জুন মাস নাগাদ সেই ট্রেনের নকশা প্রকাশ্যে আসবে এবং ডিসেম্বরেই তা চালু করার পরিকল্পনা। তবে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বাজেটে এই পরিকল্পনার ঘোষণা আগে হয়নি। যেটা করতে পারেন নির্মলা।
রেলের যা পরিকল্পনা তাতে, উত্তর রেলের কারখানায় তৈরি হওয়া হাইড্রোজেন ট্রেনের পরীক্ষামূলক সফর হবে হরিয়ানার সোনিপত-জিন্দ শাখায়। এর পরে তা চালু করা হবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের হেরিটেজ তালিকাভুক্ত রেলওয়েতে। সেই মতোই ডিসেম্বরে হাইড্রোজেন ট্রেন পাবে বাংলার দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে। এ ছাড়াও এই ট্রেন পাবে নীলগিরি মাউন্টেন রেলওয়ে, কালকা শিমলা রেলওয়ে-সহ বিভিন্ন ন্যারো গেজ রেলপথ। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই বেঙ্গালুরুতে সংবাদমাধ্যমকে এই পরিকল্পনার কথা জানিয়ে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বলেছিলেন, ‘‘রেল যে ‘গো গ্রিন’ কর্মসূচি নিয়েছে তা সবার আগে চালু হবে হেরিটেজ রুটগুলিতে।’’
রেলের যা পরিকল্পনা তাতে বন্দে ভারতে এক্সপ্রেসের মতো হাইড্রোজেন ট্রেনও সম্পূর্ণ ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরি করা হবে। নাম দেওয়া হবে ‘বন্দে মেট্রো’। বিদ্যুৎ বা ডিজেলচালিত ট্রেনের তুলনায় হাইড্রোজেনকে জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করায় ট্রেনে খরচ কম হবে। ফলে এই ট্রেনের ভাড়াও তুলনায় কম হবে। রেল দাবি করেছে, এই ট্রেনগুলি তৈরিই করা হচ্ছে কম ভাড়ায় স্বচ্ছন্দ এমন যাত্রীদের কথা ভেবে।
রেল সূত্রে খবর, বাজেটে আরও বেশি ‘বন্দে ভারত এক্সপ্রেস’ চালুর ঘোষণাও হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর সেটা করার জন্য রেলের পরিকাঠামো খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির কথা জানাতে পারেন নির্মলা। প্রসঙ্গত, গত দু’টি বাজেটেই এই খাতে বরাদ্দ বাড়িয়েছে কেন্দ্র। একই ভাবে বরাদ্দ বাড়তে পারে দেশে আরও বেশি আধুনিক মানের স্টেশন বানানোর জন্য। ইতিমধ্যেই চালু করা রেলের অম্রুত ভারত স্টেশন প্রকল্পে গতি আনার জন্যই হবে ওই বরাদ্দ বৃদ্ধি।
গত কয়েক বছর ধরেই রেল পরিকাঠামো বাড়ানোর দিকে নজর দিয়েছে। গোটা দেশেই বিভিন্ন প্রকল্প চলছে। নতুন লাইন থেকে আধুনিক মানের সেতু নির্মাণের কাজ চলছে। মনে করা হচ্ছে, এ বার নতুন প্রকল্প ঘোষণার থেকে পুরনো প্রকল্পগুলিতে বরাদ্দ বৃদ্ধিতেই জোর দেওয়ার কথা জানাবেন নির্মলা।