ডুরান্ড কাপের ফাইনালে হারের দায় নিজের ঘাড়েই নিলেন মোহনবাগানের কোচ হোসে মোলিনা। জানালেন, তাঁর কিছু ভুল সিদ্ধান্তের কারণেই হারতে হয়েছে সবুজ-মেরুনকে। আইএসএল এবং এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের আগে মোহনবাগানকে অনেক উন্নতি করতে হবে বলে জানালেন মোলিনা।
নর্থইস্ট ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে এ ভাবে দু’গোলে এগিয়েও যে হারতে হবে, তা বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না মোহনবাগান ফুটবলারেরা। ম্যাচের পর অনেকেই মাথায় হাত দিয়ে মাঠে শুয়ে পড়েছিলেন। হারের পদক নেওয়ার পর সারিবদ্ধ ভাবে চলে গেলেন সাজঘরে। কারও মুখে কোনও কথা নেই। এক বছর আগে যে দল এই প্রতিযোগিতায় জিতে মাঠে সমর্থকদের সঙ্গে উল্লাস করেছিল, তার বিপরীত চিত্র দেখা গেল শনিবার।
সাংবাদিক বৈঠকে মোলিনা বললেন, “এখনও বুঝতে পারছি না দ্বিতীয়ার্ধে কোথায় ভুল হল। তাই ব্যাখ্যা করাও সম্ভব নয়। প্রথমার্ধে আরও গোল করতে পারতাম। দ্বিতীয়ার্ধে কোনও কিছুই কাজে লাগেনি। নর্থইস্ট বার বার আমাদের চাপে ফেলেছে। প্রথমার্ধের মতো খেলতে পারিনি। আমার কয়েকটা সিদ্ধান্তও ভুল ছিল। যে হেতু আমি কোচ, তাই আমারই ভুল। খেলোয়াড়দের কোনও দোষ দিতে চাই না। আমাদের অনেক উন্নতি করতে হবে। হারতে কেউ চায় না।”
মোলিনার একাধিক ভুলের মধ্যে একটি নিঃসন্দেহে বিরতিতে সাহাল সামাদকে তুলে নেওয়া। প্রথমার্ধের শেষের দিকে গোল করাই নয়, ৪৫ মিনিটে সাহাল যথেষ্ট ভাল খেলেছেন। মাঝমাঠ জমাট রেখেছিলেন, যার অভাব বার বার বোঝা গিয়েছে দ্বিতীয়ার্ধে। সাহালকে তুলে নেওয়ার প্রসঙ্গে মোলিনা বলেছেন, “ও ভাল খেলছিল ঠিকই। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণে আরও লোক বাড়াতে চেয়েছিলাম। তাই দিমিকে নামাই। বুঝতে পারিনি সেটা কাজে লাগবে না।”
আইএসএল এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগের আগে সব জায়গায় তাঁদের উন্নতি করতে হবে বলে মনে করেন মোলিনা। বলেছেন, “প্রথমার্ধের খেলায় খুশি। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে বিপক্ষের চালে মাত হয়ে গিয়েছি। অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হয়ে পড়িনি ঠিকই। কিন্তু বল কোথায়, কাকে, কী ভাবে পাস দিতে হবে সেটা বুঝতে পারিনি।”
এই রক্ষণ নিয়ে কি ৩-৫-২ ছকে খেলা উচিত? মোলিনার স্পষ্ট জবাব, “অবশ্যই উচিত, যদি আমরা ঠিকঠাক নিজেদের কাজটা করতে পারি। আপনারা দেখেছেন এই ছকেই প্রথমার্ধে আমরা দুটো গোল করেছি। দ্বিতীয়ার্ধে কোনও ভাবে সেটা হয়নি। আরও উন্নতি করতে হবে আমাদের।”
অন্য দিকে, নর্থইস্টের কোচ জুয়ান পেদ্রো বেনালি বললেন, “অনেকেই প্রথমার্ধের পর আমাদের নিয়ে হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু আমরা কতটা ক্ষুধার্ত ছিলাম সেটা প্রমাণ করে দিয়েছি। বিরতিতে কী বলেছি দলকে সেটা ফাঁস করতে রাজি নই। কিন্তু যা-ই বলে থাকি, সেটা কাজে লেগেছে।”
টাইব্রেকারে দুই সেভের নায়ক গুরমিত সিংহের আদর্শ জার্মানির গোলকিপার ম্যানুয়েল ন্যুয়ের। তিনি বললেন, “আমি টাইব্রেকারের সময় আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। নিজের পরিকল্পনা কাজে লাগিয়েছি। এই জয় এবং ট্রফি আমার পরিবার এবং প্রেমিকাকে উৎসর্গ করছি।”
ডুরান্ড কাপে ছ’টি গোল করে সোনার বুট জিতেছেন কেরল ব্লাস্টার্সে নোয়া সাদাউই। সোনার গ্লাভস জিতলেন গুরমিত। সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন নর্থইস্টেরই জিতিন এমএস।