দেড় মাস আগেই শেষ হয়েছে প্রাথমিক স্কুলে নিয়োগের পরীক্ষা। এর মধ্যেই তার উত্তরপত্র কী ভাবে শাসকদল তৃণমূলের যুব নেতা কুন্তল ঘোষের কাছে পৌঁছল জানতে চেয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। সোমবার তার জবাব দিলেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল। তাঁর বক্তব্য, পরীক্ষার্থীদের আসল উত্তরপত্র বা ওএমআর শিট সুরক্ষিত রয়েছে পর্ষদের কাছেই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা যে উত্তরপত্রের কথা বলছেন, তা আসল ওএমআর শিটের প্রতিলিপি। তাই তার দায় পর্ষদের নয়। সোমবার একটি সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি বলেন, ‘‘এই ঘটনায় কেউ বিভ্রান্ত হবেন না। যথাসময়েই টেট পরীক্ষার্থীরা তাঁদের পরীক্ষার ফল জানতে পারবেন।’’
গত ১১ ডিসেম্বরই হয়েছে টেটের নিয়োগের পরীক্ষা। সেই পরীক্ষায় বসেছিলেন কয়েক লাখ টেট পরীক্ষার্থী। দেড় মাস আগে হওয়া সেই পরীক্ষারই ১৮৯টি উত্তরপত্রের প্রতিলিপি এবং অ্যাডমিট কার্ড কুন্তলের ফ্ল্যাটে পাওয়া গিয়েছে বলে রবিবার জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা ইডি। সোমবার তারই জবাব দিলেন পর্ষদ সভাপতি। তিনি বলেন, ‘‘প্রত্যেক পরীক্ষার্থীকেই একটি করে উত্তরপত্রের প্রতিলিপি দিয়েছিলাম আমরা। যাতে ফল প্রকাশের পর তারা নিজেদের ফল উত্তরপত্রের সঙ্গে মিলিয়ে নিতে পারেন। সেই প্রতিলিপি যদি কোনও পরীক্ষার্থী কারও হাতে তুলে দিয়ে থাকেন তবে তার জন্য পর্ষদ দায়ী নয়।’’
সোমবার এই ঘটনায় পর্ষদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কুন্তলের বাড়িতে পাওয়া উত্তরপত্রের প্রতিলিপি নিয়ে তিনি জানতে চান, ‘‘কী ভাবে ওই উত্তরপত্র পৌঁছল কুন্তলের বাড়িতে?’’ জবাবে আদালতেও পর্ষদের আইনজীবী জানান, ‘‘পর্ষদের ভাবমূর্তি নষ্টের চেষ্টা করছেন কেউ কেউ। আমরা পরীক্ষার সময় ওএমআর শিটের প্রতিলিপি (কার্বন কপি) পরীক্ষার্থীদের দিয়েছি। এতে ফলপ্রকাশ হলে তা যাচাই করতে পারবেন পরীক্ষার্থীরা। এ বার কোনও প্রার্থী যদি সেই প্রতিলিপি অন্য কাউকে দিয়ে থাকেন সে ক্ষেত্রে আমরা কী করতে পারি?’’
একই সঙ্গে পর্ষদের আইনজীবী এ কথাও বলেন, ‘‘আমরা অবাক হচ্ছি, এত কঠোর ভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে পরীক্ষা নেওয়ার পরও এই ধরনের ঘটনা সামনে আসছে। আমাদের তরফে কোনও খামতি রাখা হয়নি।’’